ঝুলন্ত পার্লামেন্টের পথে মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার সাধারণ নির্বাচনে আনোয়ার ইব্রাহিম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে দেশটি ঝুলন্ত পার্লামেন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
রবিবার ঘোষিত ফলাফলে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনে পার্লমেন্টের ২২২টি আসনের মধ্যে আনোয়ার ইব্রাহিমের পাকাতান হারাপান জোট ৮২টি আসন পেয়েছে আর এর ঠিক পেছনেই আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিনের ন্যাশনাল এলায়েন্স। দলটি পেয়েছে ৭৩টি আসন। তবে একটি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি আর দুটি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। খবর আলজাজিরার।
নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুবের ক্ষমতাসীন জোট বারিসান ন্যাশনাল কোয়ালিশনের ভরাডুবি হয়েছে। তারা পেয়েছে মাত্র ৩০টি আসন।
দুর্নীতির অভিযোগে পর্যদুস্ত বারিসান ন্যাশনাল কোয়ালিশনের সামনে অবশ্য এখনও ক্ষমতায় যাওয়ার পথ রয়েছে নির্বাচন পরবর্তী জোট গঠনের মাধ্যমে। এই দলটি ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ২০১৮ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়া শাসন করে আসছিল।
আনোয়ার ইব্রাহিম এবং মুহিদ্দিন দুজনই দাবি করেছেন যে সরকার গঠন করার মতো পর্যাপ্ত সমর্থন তাদের রয়েছে তবে দুজনের কেউই খোলাসা করেননি কাদের সঙ্গে তারা জোট করবেন।
ধীর গতির অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফিতির সমস্যার মধ্যে কোনো দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় দেশটির রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সহসাই কাটছে না বলে মনে করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়ার নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে ৯৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ যিনি আলাদাভাবে মালয় মুভমেন্ট নামে একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, এই নির্বাচনে তার নিজের আসন থেকেই হেরে গেছেন।
এদিকে, আনোয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন যে তিনি তার প্রতি সমর্থনের বিস্তারিত বিষয় জানিয়ে মালয়েশিয়ার রাজা আল সুলতান আব্দুল্লাহকে চিঠি দেবেন। যদি তিনি দেশটির ক্ষমতায় আসেন তবে তা হবে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা কেননা ২৫ বছর দেশটির বিরোধী দলের নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় থাকলেও একসময় মনে করা হতো তিনিই প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য উত্তরসূরি। তবে নানা রাজনৈতিক উত্থান-পতনে তার বিরুদ্ধে রয়েছে সমকামিতায় অভিযুক্ত হওয়ার মতো অভিযোগ।
অন্যদিকে, মুহিদ্দিনের নতুন ন্যাশনাল এলায়েন্স গঠিত হয়েছে মালয়কেন্দ্রিক রক্ষণশীল দলগুলো নিয়ে যার মধ্যে আছে ইসলামপন্থি দলও। গোত্র ও ধর্ম মালয়েশিয়ার একটি বিভাজনকারী ইস্যু। দেশটির সংখাগরীষ্ঠ লোকজন জাতিগত মালয় মুসলিম, আর জাতিগত চাইনিজ ও ভারতীয়রা হলো সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী।
নির্বাচনে মুহিদ্দিন ও ইসমাইল সাবরির দল যদি কোনো সমঝোতায় পৌঁছে এবং কোয়ালিশন সরকার গঠনে একমত হয় তবে তা হবে আনোয়ার ইব্রাহিমের ক্ষমতায় যাওয়ার অন্যতম অন্তরায়।