ডুবে যাওয়া সাবমেরিনের নাবিকদের বিদায়ী সংগীতের ভিডিও প্রকাশ
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ডুবে যাওয়া সাবমেরিনের নাবিকেরা একসঙ্গে জড়ো হয়ে একটি বিদায়ী সংগীতে সুর মেলাচ্ছেন। বিবিসির খবরে এমনটি জানানো হয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নাবিকরা সাম্পাই জুমপা নামে ইন্দোনেশিয়ার একটি জনপ্রিয় গান গাইছেন, যার মানে হচ্ছে- ‘আবার দেখা হবে।’
ইন্দোনেশিয়ার সরকার নিশ্চিত করেছে, গত বুধবার ডুবে যাওয়া সাবমেরিন কেআরআই নাঙ্গালা ৪০২-এর ধ্বংসাবশেষ রোববার সাগরের তলদেশে পাওয়া গেছে। সাবমেরিনে থাকা ৫৩ জন নাবিকের সবাই মারা গেছেন।
নিখোঁজ হওয়ার আগে এক টর্পেডো মহড়ায় অংশ নিয়েছিল সাবমেরিনটি এবং এর ডুবে যাওয়ার কারণ এখনো জানা যায়নি।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নাবিকেরা অ্যাকুস্টিক গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন, আর তাদের সঙ্গে সাবমেরিনের কমান্ডার হ্যারি অকটাভিয়ানও রয়েছেন। তাদের গানের কথাগুলো এমন, ‘যদিও এখনই তোমাকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত নই আমি, কিন্তু তোমাকে ছাড়া বেঁচেও থাকতে পারব না। তোমার ভালো হোক, মঙ্গল হোক।’
ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দিজাওয়ারা হুইমবো বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার বিদায়ী সংবর্ধনার জন্য গাওয়া হচ্ছিল গানটি, তখন সেটি রেকর্ড করা হয়েছিল।
এদিকে নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ এবং নাবিকদের মরদেহ উদ্ধারের পরিকল্পনা করেছে। এসব ধ্বংসাবশেষ সাগরের ৮০০ মিটারেরও বেশি গভীরে রয়েছে, এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন সাগরের অত নিচ থেকে উদ্ধারকাজ চালাতে বিশেষায়িত যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হবে।
সোমবার নিহত নাবিকদের স্বজনেরা বালির সমুদ্রতীরে এক শোকসভায় মিলিত হন। সেখানে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো সাবমেরিনের নাবিকদের দেশের ‘সেরা দেশপ্রেমিক’ বলে বর্ণনা করেন। জোকো উইদোদো নিহত নাবিকদের সন্তানদের পড়াশোনার খরচ সরকার বহন করবে বলে ঘোষণা দেন।
জার্মানিতে তৈরি কেআরআই নাঙ্গালা সাবমেরিনটির বয়স ৪০ বছর, তবে ২০১২ সালে এটিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিয়ে সংস্কার করা হয়েছিল। নিখোঁজ সাবমেরিন অনুসন্ধানে যুক্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং ভারত। তখনো আশা করা হচ্ছিল সাবমেরিনটি হয়ত উদ্ধার করা সম্ভব হবে, এবং নাবিকদের হয়ত বাঁচানো যাবে। কিন্তু গত রোববার কর্মকর্তারা জানান যে, সাবমেরিনটির থেকে সিগনাল পেয়েছেন তারা। এরপরই সিঙ্গাপুর থেকে আনা একটি উদ্ধারকারী ডুবোজাহাজ পাঠানো হয় সাবমেরিনের অবস্থান এবং ধ্বংসাবশেষের চাক্ষুষ প্রমাণ দেখে আসতে।