ডোনাল্ড ট্রাম্প হেরেছেন, ‘দিস ইজ নট এ ফেক নিউজ’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে গেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ শনিবার মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর পক্ষ থেকে এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
এরপরই মার্কিন নাগরিকরা টিপ্পনি কেটে বলতে শুরু করেছেন, ট্রাম্প হেরেছে। এটা একেবারেই সত্য। ‘দিস ইজ নট এ ফেক নিউজ।’ (এটা কোনো মিথ্যা খবর নয়।)
অবশ্য ‘দিস ইজ নট এ ফেক নিউজ’- এই উক্তির পিছনে একটা গল্পও আছে।
২০১৬ সালের নির্বাচনে জিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘লাগামহীন’ বক্তব্যের কারণে অনেক গণমাধ্যমই তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। তিনি কোনো ধরনের রাখঢাকা ছাড়াই প্রকাশ্যে এসব গণমাধ্যমের সমালোচনা করতে থাকেন।
যদিও মিডিয়া মোঘল হিসেবে পরিচিত রুপার্ট মারডকের নজর সবসময়ই ট্রাম্পের দিকেই ছিল। মারডকের মালিকানাধীন তিনটি প্রভাবশালী প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজ, নিউইয়র্ক পোস্ট ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ট্রাম্পকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দুর্দান্ত সঙ্গ দিয়ে গেছে। ঠিক এর বিপরীতে ছিল সিএনএনের অবস্থান।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে হোয়াইট হাউসের মিডিয়া সেন্টারের চেনা দৃশ্য। কোনো নীতির সমালোচনা করে প্রশ্ন করলেই সেই সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপে যেতেন প্রেসিডেন্ট। প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলতে থাকতেন, ‘দিস ইজ নট এ ফেক নিউজ’। মোদ্দা কথা, নিজের পছন্দের গণমাধ্যম আর সাংবাদিক ছাড়া অন্য কারো প্রশ্নের তেমন কোনো উত্তরও দিতে না ট্রাম্প। আর তখন থেকেই ভাইরাল হয়ে যায় ট্রাম্পের এই উক্তি- ‘দিস ইজ নট এ ফেক নিউজ’।
ট্রাম্পের জামানায় হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ব্রিফিংয়ে নিয়মিত থাকা কয়েকজন সাংবাদিকের নাম তালিকা থেকে বাদ যায়। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর সিএনএনের হোয়াইট হাউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জিম অ্যাকোস্টারের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডই বাতিল করে দেওয়া হয়। তাঁর অপরাধ ছিল, তিনি প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন। এ নিয়ে আদালতে যায় সিএনএন। রায় সিএনএনের পক্ষে যায়। জিম অ্যাকোস্টারকে তাঁর অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ফেরত দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
আজ শনিবার মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ব্যাটলগ্রাউন্ডখ্যাত পেনসিলভানিয়ায় পপুলার ভোটে জিতে গেছেন জো বাইডেন। এই অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা ২০টি। জয়ের ফলে এখানকার সব ভোট পেয়েছেন জো বাইডেন। আর এর মধ্য দিয়ে তিনি কাঙ্ক্ষিত ২৭০ ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেলেন। এখন জো বাইডেনের মোট ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২৭৩।
অপরদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা ২১৪। যদিও এখনো অ্যারিজোনা, জর্জিয়া ও নেভাদায় ভোট গণনা চলছে। এই তিনটি অঙ্গরাজ্য বাদ দিয়েই ট্রাম্পকে হারালেন বাইডেন।