তাইওয়ানের সেনাদের গোপনে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্পেশাল অপারেশন ইউনিট এবং মেরিনদের একটি দল তাইওয়ানে গোপনে সেখানকার সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কাজ করছে। তারা ২০২০ সাল থেকে তাইওয়ানের সেনাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে কয়েকটি পশ্চিমা গণমাধ্যম।
গতকাল বৃহস্পতিবার একাধিক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই ডজন সেনাসদস্য ‘অন্তত এক বছর’ ধরে তাইওয়ানের স্থল ও সমুদ্র বাহিনীগুলোকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে।
চীনকে ক্ষেপিয়ে তুলতে পারে, এমন ঝুঁকি সত্ত্বেও ওয়াশিংটন এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময়কালে চীনও তাইওয়ানের আশপাশে তাদের শক্তি প্রদর্শন বাড়িয়ে দিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আল জাজিরা।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড মনে করে চীন। তাই জোরপূর্বক তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় তারা। অন্যদিকে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে।
তাইওয়ানের সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে অবগত দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বাহিনীগুলোর কয়েকজন সদস্য পালা করে অস্থায়ীভিত্তিতে তাইওয়ানে গিয়ে এসব প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন।
কতদিন ধরে এই প্রশিক্ষণ চলে আসছে সে সম্বন্ধে কিছু বলতে রাজি হননি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুই কর্মকর্তা; তবে তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, প্রশিক্ষণ জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ থেকেই চলে আসছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের (ডব্লিউএসজে) প্রতিবেদন নিয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রয়টার্সকে তারা বলেছে, ‘সামরিক যত আদান-প্রদান, সবই বার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে হচ্ছে।’
ডব্লিউএসজে’র প্রতিবেদনের তথ্য স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি পেন্টাগন। তাদের এক মুখপাত্র বলেছেন, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা চাহিদা বিবেচনা করেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক সহায়তা দেয়।
সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানের ব্যাপারে আগ্রাসী তৎপরতা জোরদার করেছে চীন। তারা তাইওয়ানের সমুদ্র ও আকাশসীমার কাছে দফায় দফায় সামরিক মহড়া চালাচ্ছে।
গত কয়েক দিনে তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা সীমানায় যুদ্ধবিমান পাঠায় চীন। এ নিয়ে তাইওয়ান ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
অঞ্চলটিতে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চীন এমন উসকানিমূলক কার্যকলাপ করছে বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানকে নিশানা করে চীনের সামরিক, অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক চাপ ও জবরদস্তি বন্ধ করতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।