তালেবানের হাতে মারধরের শিকার একাধিক সাংবাদিক
আফগানিস্তানে নারীদের বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দেশটির একাধিক সাংবাদিক তালেবানের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
গত মঙ্গলবার তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়। তারপরই তালেবানের হাতে সাংবাদিকদের মারধরের শিকার হওয়ার একাধিক ছবি অনলাইনে আসে।
ছবিতে দেখা যায়, দুই ব্যক্তি খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছেন, যাদের শরীরে আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে।
বিবিসির খবর বলা হয়, মারধরের শিকার দুজন আফগান সংবাদমাধ্যম ইটিলাট্রোজের সংবাদকর্মী। তাদের একজন সংবাদমাধ্যমটির ফটোগ্রাফার নেমাতুল্লাহ নাকদি, অপরজন রিপোর্টার তাকি দরিয়াবি।
গতকাল বুধবার কাবুলের পশ্চিমাঞ্চলে নারীদের একটি বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন তারা। সেখান থেকে তাদের আটক করে তালেবান। পরে তাদের একটি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে বেদম মারধর করা হয়।
নেমাতুল্লাহ নাকদি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘একজন তালেবান আমার মাথায় তার পা রাখেন। তারপর কংক্রিটের সঙ্গে আমার মুখমণ্ডল পিষে দেন। তারা আমার মাথায় লাথি মারেন। আমি ভেবেছিলাম তারা আমাকে মেরে ফেলবেন।’
নেমাতুল্লাহ নাকদি জানান, কাজ ও শিক্ষার অধিকারের দাবিতে আফগান নারীদের বিক্ষোভ–সমাবেশের ছবি তোলা শুরু করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে এসে একজন তালেবান যোদ্ধা আগ্রাসীভাবে কথা বলতে থাকেন।
নাকদি আরও বলেন, ‘তারা আমাকে বলেছিলেন, আপনি ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে পারবেন না। যারা ছবি ও ভিডিও ধারণ করছিলেন, তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। পরে তালেবান সদস্যরা আমাকে অপমান করতে শুরু করেন। আমাকে লাথি মারতে থাকেন।’
নাকদি বলেন, যখন তিনি তালেবানকে জিজ্ঞেস করেন, কেন তাকে মারধর করা হচ্ছে, তখন তাকে বলা হয়, ‘তুমি ভাগ্যবান যে তোমার শিরশ্ছেদ করা হয়নি।’
গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালেবান। তার তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করে তারা। এই সরকারের মন্ত্রিসভায় কোনো নারী নেই। এর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলসহ একাধিক স্থানে বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভ হয়। এসব বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী।
কাবুলে নারীদের একটি বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয় তালেবানের নিরাপত্তা বাহিনী। কাবুলের পাশাপাশি ফাইজাবাদেও বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার কথা জানা যায়।