তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবি, ১৯ অভিবাসন প্রত্যাশী নিহত
তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে ১৯ অভিবাসন প্রত্যাশী নিহত হয়েছে। নিহত সবাই সাব-সাহারান অফ্রিকার দেশগুলোর বাসিন্দা। নিহতরা নৌকা দিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যেতে চাইছিল বলে জানা গেছে। একটি মানবাধিকার গ্রুপের বরাতে আজ রোববার (২৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরা।
ইতালির সংবাদ সংস্থা এএনএসএ জানিয়েছে, রোববার ভোরের দিকে নৌকাডুবিতে ওসব অভিবাসন প্রত্যাশীরা মারা যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় ইতালির ল্যামপেদুসা দ্বীপে পৌঁছেছে দুই হাজারেরও বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে একদিনে ইতালিতে পৌঁছানোয় এটি রেকর্ড বলে দাবি করছে সংবাদ সংস্থাটি।
ফোরাম ফর সোশাল অ্যান্ড ইকোনমিক রাইটসের (এফটিডিইএস) কর্মকর্তা রমাদান বিন ওমর সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘স্ফ্যাক্স সমুদ্রসৈকত থেকে রওনা দিয়ে তিউনিসিয়ার মাহদিয়া উপকূলে নৌকাটি ডুবে যায়। তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড ডুবে যাওয়া নৌকাটির পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করেছে।’ তবে, বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ।
আল-জাজিরা বলছে, সর্বশেষ চার দিনে শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের বহনকারী পাঁচটি নৌকা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর স্ফ্যাক্সে ডুবে গেছে। এতে ৬৭ জন নিখোঁজ ও ৯ জন মারা গেছে।
তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড আগে বলেছিল, গত চার দিনে ইতালির দিকে যাওয়া প্রায় ৮০টি নৌকা থামিয়ে তিন হাজারের বেশি অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটক করেছে তারা।
দারিদ্র্য, সংঘাত থেকে পালিয়ে উন্নত জীবনের আশায় আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে ছোটা মানুষদের কাছে সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রা শুরুর অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে স্ফ্যাক্সের উপকূল। তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষ এখন কাগজপত্রহীন সাব-সাহারান আফ্রিকানদের আটকে ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে, তার মধ্যেই এই নৌকাডুবির ঘটনাগুলো ঘটছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, চলতি বছরে তিউনিসিয়া থেকে ছেড়ে আসা নৌকা করে ১২ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী ইতালিতে পৌঁছেছেন। ২০২২ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল মাত্র এক হাজার ৩০০।
এর আগে, লিবিয়া ছিল অভিবাসন প্রত্যাশীদের ইউরোপের যাত্রা শুরুর অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এফটিডিইএসর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তিউনিসিয়া উপকূল থেকে ১৪ হাজার শরণার্থী ও অভিবাসন প্রত্যাশী ইউরোপের যাত্রা শুরু করেছেন, যা আগের বছরের একই সময়ের থেকে কয়েকগুণ বেশি। ২০২২ সালের প্রথম তিন মাসে দেশটির উপকূল থেকে ইউরোপে যাওয়ার যাত্রা শুরু করেছিল মাত্র দুই হাজার ৯০০ জন।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার নিজেদের উপকূল থেকে ৭৫০ অভিবাসন প্রত্যাশীকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ইতালির কোস্টগার্ড। তারা জানিয়েছিল, দুটি অভিযানের মাধ্যমে ওসব অভিবাসন প্রত্যাশীদের উদ্ধার করা হয়।