তীব্র বিক্ষোভের মুখে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ
জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন মধ্য আমেরিকার দেশ বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। ভাইস প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্সিয়া লিনেরা ও সিনেট প্রেসিডেন্ট আদ্রিয়ানা সালভাতিয়েরাও সরে দাঁড়িয়েছেন।
গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো ২০ অক্টোবরের নির্বাচনে ‘কারচুপি হয়েছে তা নিশ্চিত’ দাবি করে ওই ফল বাতিলের আহ্বান জানায়।
মোরালেস এতে সম্মতি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজিয়ে নতুন নির্বাচন দেওয়ার কথা বললেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রধানরা তাঁকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।
২০০৬ সাল থেকে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকা দেশটির প্রথম আদিবাসী নেতা মোরালেস গত অক্টোবরে চতুর্থবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন। কোনো ব্যক্তি তিনবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে আসীন হতে পারবেন না, এমন আইন ছিল বলিভিয়ায়। ২০১৬ সালে সাংবিধানিক আদালতের বিতর্কিত রায়ে ওই নির্দেশনা তুলে দেওয়া হয়। প্রার্থী হন মোরালেস। ভোট শেষে ফল গণনা শুরু হলে ২৪ ঘণ্টার জন্য তা স্থগিত করা হয়। পরে ১০ শতাংশের মতো ভোটে জয় পান মোরালেস।
নির্বাচন বাতিলের দাবিতে চলা বিক্ষোভে মোরালেসের জোটের কয়েকজন নেতা এ সপ্তাহে আক্রমণের শিকার হন। এমনকি তাদের বাড়িঘরেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
টেলিভিশন বক্তৃতায় ইভো মোরালেস বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাচ্ছি, তবে বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানাবো, তারা যেন ভাইবোনদের ওপর হামলা ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করে।’
বিক্ষোভকারীরা মোরালেসের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পর রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছে। ‘কারচুপি’র নির্বাচন বাতিল ও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন তাঁরা।
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের পর শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের জন্য আন্দোলনকারীদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গত মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিরোধী নেতা কার্লোস মেসা।
নির্বাচনের পরপর শুরু হওয়া বিক্ষোভে অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকধারী বেশকিছু লোকও সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভে অংশ নেয়। গতকাল রোববার নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস জানায়, ২০ অক্টোবরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।