নারী মন্ত্রণালয়ের নামফলক পাল্টে যা রাখল তালেবান
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে দেশটির নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় ভবনের নামফলক বদলে ফেলা হয়েছে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
একাধিক ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় ভবনের নামফলক পরিবর্তন করে ‘প্রার্থনা ও নির্দেশনা এবং ভালো কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়’ নামকরণ করা হয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে—মন্ত্রণালয় ভবনের বাইরে থেকে করা ভিডিও অনুসারে, নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী কর্মীরা বলছিলেন, তাঁরা কয়েক সপ্তাহ ধরে কাজে আসার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু, প্রতিবারই তাঁদের বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
এক নারীকর্মী জানান, গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় ভবনের গেটগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের আরেক নারীকর্মী বলেন, ‘আমি আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মন্ত্রণালয়ই যখন নেই, সে ক্ষেত্রে একজন আফগান নারীর কী করা উচিত?’
এ বিষয়ে তালেবান কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে গতকাল পর্যন্ত তারা কোনো জবাব দেয়নি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে গত মাসে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেয় তালেবান। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল সশস্ত্র এই গোষ্ঠী। তালেবানের সে আমলে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। এবং নারীদের চাকরি করা ও শিক্ষাগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
তালেবানের আগের শাসনামলে, পুণ্যের প্রচার এবং পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় প্রকৃতপক্ষে ‘নীতি পুলিশ’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। মন্ত্রণালয়টি শরিয়ার তালেবানি ব্যাখ্যা দিয়ে সেসবের বাস্তবায়ন করত। যার মধ্যে ছিল পোশাক পরিধান সংক্রান্ত কঠোর বিধান, প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা, বেত্রাঘাতে শাস্তির বিধান ইত্যাদি।
গত ৭ সেপ্টেম্বর তালেবানঘোষিত মন্ত্রিসভায় পুণ্যের প্রচার এবং পাপ প্রতিরোধ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে একজন ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীকে রাখা হয়। তবে, মন্ত্রিসভায় কোনো নারী বিষয়ক মন্ত্রীর কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে, নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় বাদ দেওয়ার বিষয়টিও সে সময় নিশ্চিত করেনি তালেবান।
একজন জ্যেষ্ঠ তালেবান নেতা চলতি সপ্তাহের শুরুতে বলেছিলেন, সরকারি মন্ত্রণালয়ে পুরুষদের সঙ্গে নারীদের কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।