নিউজিল্যান্ডে ‘ভূমিধস’ বিজয় পেল জেসিন্ডা আরডার্নের লেবার পার্টি
জনমত জরিপে স্পষ্টতই তিনি এগিয়ে ছিলেন। শংকা ছিল, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের লেবার পার্টি। কিন্তু ভোট শেষে দেখা গেল, শুধু একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নয়; রীতিমতো ‘ভূমিধস’ বিজয় পেয়েছে লেবার পার্টি।
আজ শনিবার বিকেলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য-বামপন্থি জেসিন্ডা আরডার্নের লেবার পার্টি মোট ভোটের ৪৯ ভাগ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ ন্যাশনাল পার্টি পেয়েছে ২৭ ভাগ ভোট। দেশটির ১২০ আসনের মধ্যে এরই মধ্যে ৬৪টি আসনে জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। আরো ভোট গণনা বাকি রয়েছে।
ভোটে বিজয়ের পর জেসিন্ডা আরডার্ন সমর্থক ও নিউজিল্যান্ডবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডবাসী গত ৫০ বছরের মধ্যে লেবার পার্টির প্রতি সবচেয়ে বেশি সমর্থন ও আস্থা রেখেছে। আপনি কাকে ভোট দিয়েছেন সেটা আমরা গণ্য করব না। বরং আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা প্রতিটি নিউজিল্যান্ডবাসীর সরকার হব।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, করোনাকালীন লেবার পার্টির গৃহীত ব্যবস্থা ও ভূমিকা নিউল্যান্ডবাসীকে মুগ্ধ করেছে। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে লেবার পার্টির প্রতিশ্রুতিতে তারা আস্থা রেখেছে।
বড় ব্যবধানে ‘অসামান্য’ বিজয়ের জন্য জেসিন্ডা আরডার্নকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কনজারভেটিভ ন্যাশনাল পার্টির নেতা জুডিথ কলিন্স। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন তাঁর দল ‘শক্তিশালী বিরোধী দলের’ ভূমিকাই নেবে।
কনজারভেটিভ ন্যাশনাল পার্টির প্রধান বলেন, ‘চোখের নিমিষেই তিন বছর চলে যাবে।’ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ফিরবই।’
দেশটিতে আনুপাতিক ভোটিং ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পর গত ২৪ বছরের মধ্যে এমনটি হয়নি, যেখানে লেবার পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। নিউজিল্যান্ডে ক্ষমতায় আসার জন্য তাদের সব সময় অন্য দলের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে হয়েছে। তবে এবার এর ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
লেবার পার্টির মন্ত্রী ডেভিড পার্কার বলছেন, ‘এ নির্বাচনের ভোটগণনা দেখে মনে হচ্ছে ১৯৪০-এর দশকের পর থেকে এটিই সবচেয়ে দুর্দান্ত নির্বাচন। প্রথমে ও সর্বাগ্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করতেই হবে, সেই সঙ্গে লেবার পার্টির টিম ও লেবারদের আন্দোলনেরও প্রশংসা করতে হবে।’
২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচন শেষে লেবার পার্টি আরো দুটি দলের সঙ্গে জোট গঠন করে এবং দেশটির শীর্ষ পদে আসীন হন ৪০ বছর বয়সী আরডার্ন।
গত মাসে (সেপ্টেম্বর) এই ভোট হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে নির্বাচন পিছিয়ে যায়। অর্ধকোটির কিছু বেশি বাসিন্দার দেশ নিউজিল্যান্ডে গত ৩ অক্টোবর থেকে চলা আগাম ভোটে অংশ নিয়েছে ১০ লাখের বেশি মানুষ।