নির্বাচন বাতিলের দাবিতে কিরগিজস্তানে তুমুল বিক্ষোভ, পার্লামেন্ট ভবনে অগ্নিসংযোগ
জাতীয় নির্বাচনের ফল বাতিলের দাবিতে কিরগিজস্তানে ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভ। গত রোববার কিরগিজস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভোট কেনাবেচার অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফল বাতিল ও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ করছেন আন্দোলনকারীরা।
আজ মঙ্গলবার প্রায় দুই হাজারের মতো আন্দোলনকারী কিরগিজস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির ভবনের সামনে জড়ো হন এবং সেখানে কারাবন্দি সাবেক প্রেসিডেন্ট আলমাজবেক আতামবায়েভকে বের করে আনেন। একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে মুক্তি দেওয়ার অভিযোগে আতামবায়েভকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া আন্দোলনকারীরা দেশটির রুশপন্থী প্রেসিডেন্ট সুরনবাই জিনবেকভের অফিসের ভবনের কিছু অংশ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেন। একই ভবনে থাকা পার্লামেন্টে ঢুকেও ভাঙচুর চালিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বিবিসি ও আলজাজিরা তাদের খবরে এসব তথ্য দিয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবিতে গতকাল সোমবার রাজধানী বিশকেকে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়। এছাড়া সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশটির আরো কয়েকটি বড় শহরে বিক্ষোভ হয়। রাজধানীতে গতকাল পাঁচ হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীর মধ্যে দেওয়া বক্তৃতায় এক প্রার্থী বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি তিনি দেখবেন। কিন্তু তিনি কথা রাখেননি।’
এদিকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কিছু জায়গায় সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করে পুলিশ। এতে অন্তত ১২০ জন আহত হয়েছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে। পুলিশ-বিক্ষোভকারীসহ উভয় পক্ষ থেকেই আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আহতদের মধ্যে অন্যতম বিরোধী দলীয় নেতা জানার আকায়েভও রয়েছেন।
কিরগিজস্তানে নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টন করা হয়। ১২০ আসনের পার্লামেন্টে কোনো আসন পেতে একটি দলকে অন্তত সাত শতাংশ ভোট পেতে হয়। এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয় ১৬টি দল। এর মধ্যে কেবল চারটি দল সাত শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। এর মধ্যে তিনটি দল প্রেসিডেন্ট জিনবেকভের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। এদের মধ্যে দুটি দল ২৫ শতাংশ করে ভোট পেয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে কিরগিজস্তানের বিরোধী দলগুলো ভোটের ফলাফল স্বীকার না করার ঘোষণা দিয়েছে।