প্যানডোরা পেপার্স : জর্ডানের বাদশাহর গোপন সম্পদের সাম্রাজ্য
জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল-হুসেইন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের (১০ কোটি ডলার) গোপন সম্পদের এক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন বলে উঠে এসেছে প্যানডোরা পেপার্সে ফাঁস হওয়া তথ্যে।
এসব আর্থিক নথিতে বাদশাহর মালিকানাধীন কয়েকটি অফশোর কোম্পানির একটি গোপন নেটওয়ার্ককে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ১৫টি বাড়ি কিনেছেন জর্ডানের বাদশাহ।
ফাঁস হওয়া ওই তথ্যের বরাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ম্যালিবু এবং যুক্তরাজ্যের অ্যাসকট ও লন্ডনে এসব বাড়ি কিনেছেন বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ।
তবে বাদশাহর আইনজীবীরা বলছেন, ব্যক্তিগত সম্পদ ব্যবহার করেই তিনি এসব বাড়ি কিনেছেন এবং এ ক্ষেত্রে অফশোর কোম্পানিকে কাজে লাগানোয় ‘অনুচিত’ কিছু ঘটেনি।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) প্রথমে এসব নথি হাতে পায়। ১১৭টি দেশের সাড়ে ছয়শর বেশি সাংবাদিক সেসব নথি বিশ্লেষণ ও তদন্ত করে এখন ধারাবাহিকভাবে তথ্য প্রকাশ করছেন। এর নাম দেওয়া হয়েছে প্যানডোরা পেপার্স।
৯৫ হাজার অফশোর ফার্মের ফাঁস হওয়া এই এক কোটি ২০ লাখ গোপন নথি থেকে বিশ্ব নেতা, রাজনীতিবিদ এবং ধনকুবেরদের গোপন সম্পদ এবং লেনদেনের তথ্য বেরিয়ে আসছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন দেশ থেকে মোটা অঙ্কের আন্তর্জাতিক সহায়তা পায় জর্ডান। তাদের বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা দেওয়া দেশগুলোর একটি যুক্তরাজ্য। জর্ডানকে দেওয়া সহায়তা তহবিল দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২০১৯ সালে ৬৫ কোটি পাউন্ড দিয়েছিল যুক্তরাজ্য।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে নমনীয় সম্পর্ক রাখতে দেখা যায়। তবে নিজ দেশে তার বিরুদ্ধে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগ রয়েছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাজেট ছাঁটাই এবং কর বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভও হয়েছে।
প্যানডোরা পেপার্সে দেখা যাচ্ছে, সম্পদের প্রতি জর্ডানের বাদশাহর আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয়েছে ২০০৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে। ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে তিনি ওয়াশিংটন ডিসির ব্যয়বহুল এলাকা জর্জটাউনে চারটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন।