প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব-ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক
মধ্যপ্রাচ্যের ঐতিহাসিক তিক্ত সম্পর্কের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো আলোচনা হয়েছে। খবর বিবিসির।
সৌদি আরবের টিভি চ্যানেল আল-এখবারিয়ায় প্রচারিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, চীনে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ এবং তার ইরানীয় প্রতিপক্ষ হোসেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
গত মাসে চীনে নিম্ন পর্যায়ের আলোচনার সময় কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে সম্মত হয় দেশ দুটি।
২০১৬ সালে তেহরানে নিজেদের দূতাবাসে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলা চালালে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব। রিয়াদ একজন বিশিষ্ট শিয়া মুসলিম ধর্মগুরুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানে সৌদি দূতাবাসে ওই হামলা চালানো হয়েছিল।
এতদিন সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে প্রায়ই তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করত। আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য একে অপরকে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে তারা। দেশ দুটি লেবানন, সিরিয়া, ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাতে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষকে সমর্থন করে, যা ইয়েমেন সংকটে স্পষ্ট হয়।
দেশটিতে ইরান শিয়া হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থন করেছে, যারা ২০১৪ সালে সৌদি সমর্থিত সরকারকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। পরের বছর থেকে সৌদি আরব হুথিদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ বিমান অভিযান চালাচ্ছে। এছাড়া দেশটি হুথিদের হামলা চালাতে সহায়তার অভিযোগ এনেছে ইরানের বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে ২০১৯ সালে সৌদির তেল স্থাপনায় হুতিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সৌদি আরব ও তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছিল। কিন্তু ইরান অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সমঝোতার আগের প্রচেষ্টাগুলো ব্যর্থ হয়েছে। তবে গত মাসে দেশ দুটি জানায়, দুই মাসের মধ্যে তারা আবারও দূতাবাস খুলবে। একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও নিরাপত্তার সম্পর্ক পুনরায় স্থাপন করা হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতার সঙ্গে এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। এছাড়া দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে মধ্যস্থতা করায় চীনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।