বাইডেনকে অভিনন্দন বার্তা পড়তে দিচ্ছে না ট্রাম্প প্রশাসন
মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করার পর থেকেই রাষ্ট্রনেতারা তাঁকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করেছেন। তবে বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতাদের অভিনন্দন বার্তা বাইডেন শিবিরের কানে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের নাম ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারা স্টেট ডিপার্টমেন্টে বাইডেনকে অভিনন্দন জানাতে থাকেন। মূলত বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। তবে ট্রাম্প প্রশাসন বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ায় বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের বার্তা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে না।
তবে বাইডেন শিবির স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতা ছাড়াই বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে ফোনালাপে অভিনন্দন বার্তা গ্রহণ করেছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, কিছু দেশের নেতারা আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন যে ট্রাম্প প্রশাসন তাদের সঙ্গে বাইডেনের যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে, এ জন্য তাঁরা স্টেট ডিপার্টমেন্টের বদলে ওবামা প্রশাসনের আমলে দায়িত্ব পালন করা কূটনীতিকদের সহায়তা চেয়েছেন।
এরই মধ্যে ২৯০টি ইলেকটোরাল ভোট পাওয়া বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমে বিজয়ী বলা হয়েছে। ১৪ নভেম্বর ইলেকটোরাল কলেজ সদস্যরা ভোট দেওয়ার আগ পর্যন্ত অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবারের নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণার কাজটি মার্কিন গণমাধ্যমগুলোই করে থাকে।
বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান বাইডেনকে জয়ের জন্য অভিনন্দনও জানিয়েছেন। কিন্তু এই বিজয় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর নির্বাচনী শিবির। এখনো জয়ের আশা ট্রাম্পের। এক টুইটে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা জিতব।’
এ ব্যাপারে বাইডেন বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তর কেউ ঠেকাতে পারবে না, যেমনটি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রমাণ ছাড়াই বলেছেন, গত সপ্তাহের নির্বাচন জালিয়াতি হয়েছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বাইডেন বলেন, যেভাবেই হোক, ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি একটি নতুন প্রশাসন গঠন করে তাঁর দল দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘খোলাখুলি বলছি, কোনো কিছুই আমাদের এর থেকে বিরত রাখতে পারবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পরিষ্কার হওয়ার পর দেশটির সরকারের স্বাধীন সংস্থা জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএসএ) বিজয়ী নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা করে তার স্বীকৃতি দেয়। ট্রাম্প প্রশাসনের নিয়োগকৃত জিএসএ প্রধান এমিলি মারফি এখনো এ ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেননি।
জিএসএ প্রধান একটি চিঠিতে সই করলেই রাষ্ট্রীয় তহবিল, সরকারি দপ্তর এবং সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করতে পারবে বাইডেন শিবির। তবে মারফি বলেছেন, কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, বিষয়টি এখন পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি। এ কারণে তিনি বাইডেন শিবিরকে অনুমতি দিতে পারছেন না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বাইডেন শিবির আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে।