‘বিচারবুদ্ধিহীন’ যুদ্ধের প্রতিবাদে জাতিসংঘে রুশ কূটনীতিকের পদত্যাগ
ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘বিচারবুদ্ধিহীন’ যুদ্ধের প্রতিবাদে পদত্যাগ করছেন জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ের রুশ কূটনীতিক বরিস বোনদারেভ।
একজন ঊর্ধ্বতন রুশ কূটনীতিক হয়েও কেন যুদ্ধের জেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির কাছে বোনদারেভ সে কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
বোনদারেভ বলেন, তিনি জানতেন, তাঁর কথা বলার সিদ্ধান্তের অর্থ হতে পারে ক্রেমলিন এখন তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ মনে করবে।
কিন্তু, বোনদারেভ তাঁর অটল অবস্থানের কথা জানিয়ে এ যুদ্ধকে ‘ইউক্রেনীয় জনগণের বিরুদ্ধে’ এবং ‘রাশিয়ার জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ’ বলে বর্ণনা করেন।
তবে, বরিস বোনদারেভের পদত্যাগের বিষয়ে মস্কো এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনেভা কার্যালয়ে অন্য দেশগুলোর মিশনে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বোনদারেভ। সেখানে তিনি প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ২০ বছর কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগের বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন।
পদত্যাগপত্রে বোনদারেভ লিখেছেন, ২০ বছরের কূটনৈতিক জীবনে তিনি দেশের বৈদেশিক নীতির নানা মোড় পরিবর্তন দেখেছেন। কিন্তু এই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে যা (আগ্রাসন) শুরু হয়েছে, তাতে নিজের দেশকে নিয়ে এতটা লজ্জায় তিনি আর কখনও পড়েননি।
কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বোনদারেভ মর্মাহত হলেও তিনি বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে তাঁর সঙ্গে সহমত মানুষের সংখ্যা খুব একটা নেই বলেই তিনি মনে করেন।
বোনদারেভ বলেন, ‘আমি মনে করি তাদের বেশিরভাগই, সংখ্যাগরিষ্ঠই রাশিয়া সরকারের প্রচারণা ও উপরমহল থেকে তাদেরকে যা বলা হয় সেটিই তারা অনুসরণ করে।’
বোনদারেভের মতে, যাঁরা এই যুদ্ধের পক্ষে রয়েছেন, তাঁরা শুধু একটা জিনিসই চান, তা হলো সারা জীবনের জন্য ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা, জমকালো প্রাসাদে বসবাস করা, প্রমোদতরিতে করে ঘুরে বেড়ানো এবং অসীম ক্ষমতা ও তাঁদের কাজের জন্য পুরোপুরি দায়মুক্তি উপভোগ করা।
নিজের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বোনদারেভ বলেন, তাঁর এই পদক্ষেপ একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। এতে কোনো কিছু পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তা ছাড়া, এই পদক্ষেপের ফলে রাশিয়া তাঁকে এরই মধ্যে ‘দেশদ্রোহী’ ভাবতে শুরু করেছে- এমনটিও মনে করেন বলে জানিয়েছেন বোনদারেভ।