‘ভয় সৃষ্টি করতে’ অনলাইন আইন, আতঙ্কে উগান্ডাবাসী
ব্লগার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবশালীদের সরকারি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে আফ্রিকার দেশ উগান্ডা। ২০২১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে সমালোচকদের কণ্ঠরোধে এটি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশটির ছোট-বড় সব সংবাদপত্র, রেডিও, টিভি চ্যানেলের অনলাইন ভার্সনগুলো ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রেশন করার নির্দেশ দিয়েছে উগান্ডার যোগাযোগ কমিশন (ইউসিসি)। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্ট এ নিয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন করেছে।
উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইউয়ের মুসেভিনির ৩৩ বছরের শাসনকাল নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুক পোস্ট দেওয়ায় দেশটির এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে সম্প্রতি ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হলে এ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
অনলাইনে ‘অনৈতিক’ কিছু পোস্ট করা হলে জরিমানা করার কথা জানান ইউসিসির মুখপাত্র ইবরাহিম বোসা। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামে বিপুল সংখ্যক অনুসারী (ফলোয়ার) থাকা ব্যক্তিদের বিশেষভাবে নজরদারিতে রাখার কথা জানান তিনি।
উগান্ডার নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়ে পুলিশের মুখপাত্র ফ্রেড এনাঙ্গা বলেন, অনলাইনে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্যসংবলিত যেকোনো পোস্টের কারণেই শাস্তির সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে।
সরকারবিরোধী অবস্থান নিলেই এ আইনের আওতায় পড়ে দেশটির রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, অধিকারকর্মী, ব্লগার, সংগীতশিল্পী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় ব্যক্তিরা হেনস্তার শিকার হতে পারেন। এর ফলে নিজ থেকে সত্য প্রকাশে বিরত থাকার প্রবণতা বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। নতুন আইনে সর্বোচ্চ ৬৬০ মার্কিন ডলারসহ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।
২০০৬, ২০১১ ও ২০১৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে উগান্ডা সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাইট ও নিউজ পোর্টাল বন্ধের আদেশ দেয়।
দেশটির মাকেরেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক জেরাল্ড ওয়ালুলিয়া বলেন, নির্দেশনার ধরন বলছে, ২০২১ সালের নির্বাচন সামনে রেখে সরকার এটি দিয়ে সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করতে চায়।
২০২১ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট মুসেভিনির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছেন সংগীত থেকে রাজনীতির মাঠে আসা ববি ওয়াইন। তিনি বলেন, ‘জাতিকে ভয় থেকে মুক্তি দিতে স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি আমরা। এ দেশের নাগরিকরাই হবেন দেশের মালিক। আমরা এটা করেই ছাড়ব।’