মরুর বুকে চার চাকায় ঝড় তোলেন যে নারী
অফ-রোড ড্রাইভিংয়ের জন্য কাতারের মরুভূমি বেশ জনপ্রিয়। এতদিন সেখানে শুধু পুরুষেরাই গাড়ি চালানোর রোমাঞ্চ উপভোগ করে আসছিলেন। সেই চিত্র পাল্টে দিচ্ছেন এক নারী। সংবাদ সংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এ খবর জানিয়েছে।
কাতারের মরুভূমির বালিয়াড়িতে গাড়ি নিয়ে কসরত বহু গাড়িপ্রেমীর জীবনের অন্যতম স্বপ্ন। তবে সেটি মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়।
সারা বিশ্ব থেকেই বহু মানুষ কাতারের মরুভূমিতে গাড়ি চালানোর জন্য যান। মূলত পুরুষরাই কঠিন সেই চ্যালেঞ্জ নিতে যান। কিন্তু, সেই পরম্পরা ভেঙে দিয়েছেন মারসেলে ভিসার। বললেন, ‘আমার গাড়ির চাকা বালি স্পর্শ করামাত্রই আমি মরভূমির প্রেমে পড়ে যাই।’
মারসেলে এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। ছয় বছর ধরে তিনি কাতারেই বসবাস করছেন। অফ-রোডে গাড়ি চালানোর বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন মাত্র এক বছর আগে। বড় চ্যালেঞ্জটি ছিল আমার অভিজ্ঞতা মাত্র এক বছরের। কিন্তু, এরই মধ্যে আমি মার্শাল হয়ে গেছি।’
‘এতে অনেকেরই ভ্রু কুঁচকে গেছে’, স্মিত হেসে যোগ করেন মারসেল।
একজন মার্শালের দায়িত্ব হলো দলের চালকদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করা, যাঁরা অফ-রোড ড্রাইভিং শিখতে চান, তাঁদের হাতে-কলমে গাড়িচালনার কৌশল শেখানো এবং গাড়ি চালানোর সময় কোনো চালক সমস্যায় পড়লে তাঁকে সাহায্য করা।
মারসেল বলেন, ‘আপনার কাছে শুরুতে মনে হবে এটি পুরুষের খেলা, সে কারণে আমিও এটা থেকে দূরে ছিলাম।’
মারসেলের গাড়ি চালনায় আগ্রহের বিষয়ে কথা বলেন কাতারে অফ-রোড ড্রাইভারদের ডুন রাইডার ক্লাবের প্রধান মার্শাল খালেদ শাহ। তিনি বলেন, ‘যে মুহূর্তে দেখলাম অফ-রোড ড্রাইভিংয়ে মারসেলের প্রচণ্ড আগ্রহ, তখনই ঠিক করলাম ওর দিকে নজর দিতে হবে। ওকে মার্শাল হিসেবে তৈরি করারই পরিকল্পনা ছিল।’
কাতারে বেশির ভাগ কাজের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বিভাজন দেখা যায়। ঐতিহ্যগতভাবে মরুভূমিতে পুরুষদেরই আধিপত্য। আর বালুতে নারীদের গাড়ি চালানো তো আরো অকল্পনীয় বিষয়। কিন্তু সবাইকে অবাক করে সে ধারণা বদলে দিয়েছেন মারসেলে।
শুধু গাড়ি চালনাই নয়, মারসেলে অল্প কয়েকজন মার্শালের একজন, যাঁরা দলীয় প্রধানের ভূমিকায় থাকেন। মারসেলকে দেখে অন্য নারীরাও এখন মরুভূমিতে গাড়িচালকের আসনে বসতে শুরু করেছেন। ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে পুরুষতান্ত্রিক ধারণাও।