মুসলিম গণহত্যার অভিযোগকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বললেন সু চি
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে। যেখানে গাম্বিয়ার করা গণহত্যার অভিযোগকে ‘আসলে বিভ্রান্তিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি ও নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, সু চি বলেন, ‘রাখাইনে সেনা অভিযানে যা ঘটেছে, তা গণহত্যার সংজ্ঞার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যে কারণে জাতিসংঘের আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলা কেবলই ভুল দিককে নির্দেশ করছে।’
সু চি বলেন, ‘গাম্বিয়া রাখাইন রাজ্যে মুসলিম রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সচিত্র বর্ণনা উপস্থাপন করেছে, যা কেবলই পরিস্থিতির বিবেচনায় ভুল দিককে নির্দেশ করে।’
আজ স্থানীয় সময় বুধবার রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) নিজ দেশের পক্ষে বক্তব্য দিতে গিয়ে সু চি এ কথা বলেন।
শুনানিতে তিনি আরো বলেন, ‘রাখাইনে সেনা অভিযানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ হয়তো উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তবে এর পেছনে গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল, এমনটা ধরে নেওয়া মিয়ানমারের জটিল বাস্তবতার সঙ্গে ঠিক হবে না।’
এর আগে আইসিজেতে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যাবিষয়ক মামলাটি মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সংস্থা ওআইসির প্রতিনিধি হিসেবে দায়ের করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং নৈতিক বাধ্যবাধকতা থেকেই গাম্বিয়া মামলাটি দায়ের করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির বিচারমন্ত্রী আবুবকর।
প্রক্রিয়ার শুরুটা হয় গত বছর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ওআইসি মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্থলে দেশটির বিচারমন্ত্রী আবুবকর তামবাদোকে পাঠানোর মধ্য দিয়ে।
ঢাকায় পৌঁছানোর পর আবুবকর অন্য দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির সফর করেন। ওই বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য গাম্বিয়ার নেতৃত্বে একটি কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেয় ওআইসি। সেখানে এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় গাম্বিয়াকে। বাংলাদেশসহ ওআইসির সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে গাম্বিয়া গত ১১ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করে।