মুসলিম পরিবারের সদস্যদের হত্যার ঘটনাটি সন্ত্রাসী হামলা : ট্রুডো
কানাডার অন্টারিও প্রদেশের লন্ডন শহরে গাড়ি চাপা দিয়ে এক পরিবারের চারজনকে হত্যার ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
হামলার ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ‘ইসলামবিদ্বেষ’ থেকে এই ‘সন্ত্রাসী হামলা’ চালানো হয়েছে।
হাউস অব কমন্সে গতকাল মঙ্গলবার বক্তৃতাকালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ড কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটা সন্ত্রাসী হামলা। ঘৃণা থেকে প্ররোচিত হয়ে এ হামলা চালানো হয়েছে।’
ট্রুডো আরও বলেন, ‘এই জঘন্য, নারকীয় ঘটনায় আমরা হতভম্ব, শোকস্তব্ধ। এ ধরনের জাতিবিদ্বেষ ও ঘৃণা এ দেশে কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।’
ঘটনা গত রোববারের। কানাডার দক্ষিণ-পূর্বের ছোট শহর লন্ডনে এক ট্রাকচালক ট্রাফিক সিগন্যাল ভেঙে এক পরিবারের পাঁচ জনকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলে মারা যায় চার জন— এক ৭৪ বছর বয়সি বৃদ্ধা, তাঁর ৪৬ বছর বয়সি ছেলে সৈয়দ আফজাল, আফজালের স্ত্রী ৪৪ বছর বয়সি মাদিহা সালমন এবং তাঁদের মেয়ে ১৫ বছর বয়সি ইয়ুমনা আফজাল।
গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আফজাল-মাদিহা দম্পতির নয় বছরের ছেলে ফায়েজ আফজাল। তার আঘাত গুরুতর হলেও হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ছেলেটির প্রাণসংশয় নেই।
প্রথমে ভাবা হয়েছিল, এটা দুর্ঘটনা। কিন্তু, প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা শুনে পুলিশের মনে সন্দেহ জাগে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, সে দিন লালবাতি ভেঙে কালো ট্রাকটি দানবের মতো ওই পরিবারের দিকে ধেয়ে যায়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পিষে দেয় পাঁচজনকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায়, আক্রান্তদের চেহারা ও পোশাক দেখে বোঝা যাচ্ছিল তাঁরা মুসলিম।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ট্রাকচালক ২০ বছর বয়সি নাথানিয়েল ভেল্টম্যান। তিনি টরন্টো থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের লন্ডন শহরেরই বাসিন্দা। গত সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কোনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা নেই বলেই জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে কোনো অপরাধের জন্য পুলিশের খাতায় তাঁর নামও ওঠেনি বলে জানা গেছে। জেরায় নাথানিয়েল তাঁর মুসলিমবিদ্বেষের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের।
আফজালদের পরিবার বছর ১৪ আগে পাকিস্তান থেকে এসেছিল বলে পারিবারিক সূত্রে খবর। কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো জানিয়েছেন, বালক ফায়েজের সব দায়িত্ব নেবে সরকার।