যে মশার প্রতি ভালোবাসা সিঙ্গাপুরের
মশা দিয়েই এডিসের বংশবিস্তার রোধের অভিনব একটি উপায় ‘প্রজেক্ট ওলবাকিয়া’। ওলবাকিয়া একটি ব্যাকটেরিয়া, যা ডেঙ্গু ছড়ানোর জন্য দায়ী এডিস ইজিপ্টাই মশার মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। আর তা করা হয় মশার মাধ্যমেই।
ওলবাকিয়াসমৃদ্ধ পুরুষ এডিস ইজিপ্টাই মশা নারী এডিস ইজিপ্টাই মশার সঙ্গে মিলিত হওয়ার পর যে ডিম উৎপাদিত হবে, তা নিষিক্ত হবে না। এর ফলে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ হবে। আর এই ‘ওলবাকিয়া প্রজেক্ট’ বেশ সফলভাবেই বাস্তবায়ন করছে সিঙ্গাপুর। এর সফলতাও পেতে শুরু করেছে এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্র।
এদিকে জাতীয় পরিবেশ সংস্থার (এনইএ) ডেঙ্গু প্রতিরোধের সর্বশেষ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরে গত ২ ডিসেম্বর একটি নতুন মশা উৎপাদন সুবিধা চালু হয়েছে। এর ফলে সপ্তাহে পাঁচ মিলিয়ন ওলবাকিয়াসমৃদ্ধ মশা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সংবাদমাধ্যম সিএনএ এই খবর জানিয়েছে।
এর আগে ওলবাকিয়া প্রজেক্টের তৃতীয় পর্যায়ে এসে ১৪৪টি আবাসিক এলাকায় ৯০ শতাংশ এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ করতে পেরেছিল সিঙ্গাপুর। কিন্তু এবার এই প্রজেক্ট আরো বড় পরিসরে করতে চায় তারা। এর কারণ, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশার বংশবিস্তার কমানো গেলেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেনি।
এ বছর সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির পরই বড় পরিসরে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও পানিসম্পদমন্ত্রী এমি খোর। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সিঙ্গাপুরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, উচ্চ তাপমাত্রায় মশা দ্রুত বংশবিস্তার করে।’
এর আগে সিঙ্গাপুরে ওলবাকিয়া প্রজেক্ট বাস্তবায়ন হলেও এবার নতুন সুবিধার মাধ্যমে সপ্তাহে পাঁচ মিলিয়ন মশা উৎপাদন করা হবে বলে জানানো হয়। ফলে ‘ওলবাকিয়া প্রজেক্ট’ আরো কার্যকর হবে। এ বছর নভেম্বরের ওলবাকিয়া প্রজেক্টের চতুর্থ পর্যায়ে সিঙ্গাপুরের ২৮৪টি আবাসিক এলাকায় তা কার্যকরের প্রচেষ্টা চালানো হবে। এর আগে তৃতীয় পর্যায়ে ১৪৪টি আবাসিক এলাকায় এই প্রজেক্টের মাধ্যমে ৯০ শতাংশ এডিস মশা দমন করা গিয়েছিল।
ওলবাকিয়াসমৃদ্ধ মশা দিয়ে এডিস মশার বংশবিস্তার দমন করার উদ্যোগ শুধু যে সিঙ্গাপুর নিয়েছে তা নয়, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এডিস এজিপ্টি মশার সংখ্যা কমাতে ওলবাকিয়াবাহী মশা ছেড়েছিলেন। এ ছাড়া ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতেও একই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।