রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিনকে কানাডার ‘না’, সতর্ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও
রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ৫’ ব্যবহারে এ মুহূর্তে অনুমোদন দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে কানাডা। রাশিয়ার ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও।
কানাডার উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাওয়ার্ড এনজু গতকাল মঙ্গলবার দাবি করেন, রাশিয়ার ভ্যাকসিন-সংক্রান্ত অনেক তথ্যই পাওয়া যায়নি। তাই এ মুহূর্তে রাশিয়ার ভ্যাকসিন ব্যবহারে তাঁরা অনুমোদন দিচ্ছেন না। যে দ্রুততার সঙ্গে রাশিয়া নিজেদের ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিয়েছে, তাতে বিস্ময় প্রকাশ করেন এনজু। সংবাদ সংস্থা এএনআই এ খবর জানিয়েছে।
গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রেকর্ড সময়ের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেলার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরুর দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি করে মস্কো। গতকালই ভ্যাকসিনে ছাড়পত্র দেয় রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
রাশিয়া তাদের প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের নাম রেখেছে ‘স্পুটনিক ৫’। ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর বিশ্বে প্রথমবার কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়ে গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল রাশিয়া। সে উপগ্রহের নাম ছিল ‘স্পুটনিক ১’। গতকাল করোনা ভ্যাকসিনের ঘোষণা করতে গিয়ে রাশিয়া জানিয়েছে, এটা তাদের ‘স্পুটনিক মুহূর্ত’।
কেবল কানাডাই নয়, ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সরাসরি তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও সম্প্রতি রাশিয়ার উদ্দেশে সতর্কবার্তার সুরে বলেছে, তারা যেন কোনোভাবেই তড়িঘড়ি করে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে গিয়ে প্রচলিত পথ থেকে সরে না আসে।
অবশ্য রাশিয়ার দাবি, তাদের তৈরি ভ্যাকসিন সঠিকভাবে কাজ করছে। রাশিয়া দাবি করছে, ‘স্পুটনিক ৫’ ভ্যাকসিনের প্রয়োগে মানব শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মেয়ের শরীরে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ হয়েছে।
রাশিয়ার বক্তব্য, তাদের গবেষণা নিয়ে এই প্রথম প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। কিন্তু তারা বরাবরই গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে, সেটা ১৭৬৮ সালে গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার হোক কিংবা ১৯৫৭ সালে মহাকাশযান স্পুটনিকের উৎক্ষেপণ।
ক্রেমলিন সূত্রে খবর, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে ভ্যাকসিনের উৎপাদন। অক্টোবরে রাশিয়ায় গণ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে পারে। চলতি বছরের শেষে দুই কোটি টিকার ডোজ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী রুশ গবেষকরা। আগামী এক বছরে তৈরি হবে প্রায় ৫০ কোটি ডোজ।