রাশিয়ার তেল আমদানি নিষেধাজ্ঞায় ঐক্যে পৌঁছাতে পারেনি ইইউ
রাশিয়ার তেল আমদানি নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এখনও ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেননি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে রাশিয়ার ওপর ষষ্ঠ ধাপের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনার জন্য আজ সোমবার বিশেষভাবে ডাকা সম্মেলনে পৌঁছে এ কথা জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন।
ইইউ’র পক্ষ থেকে রাশিয়ার ওপর আরোপ হতে যাওয়া ষষ্ঠ ধাপের এই নিষেধাজ্ঞায় তেল আমদানি বন্ধের খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইইউ এখনও সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। এটা এত সহজ কাজ নয়। সবার প্রতি স্বচ্ছতা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখনও আমরা সমাধান পাইনি। আগামী ৪৮ ঘণ্টায়ও এর সমাধান মিলবে বলে আমি খুব একটা আশাবাদী নই। তবে আমি নিশ্চিত, সময় লাগলেও একটা উপায় মিলবে।’
প্রায় মাস খানেক ধরেই ইউরোপের ২৭ দেশের নেতারা রাশিয়ার ওপর ষষ্ঠ ধাপের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা করছে। কারণ, নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিতে ইউরোপের সব দেশগুলোর ঐক্যমতের প্রয়োজন পড়ে।
এর আগে আজ সোমবার ইইউ দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতেরাও রাশিয়ার তেল আমদানি নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনায় বসেন। সেখানেও ঐক্যে পৌঁছাতে ব্যর্থতার খবর মিলেছে। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটি জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রাশিয়ার তেল-গ্যাসে ইউরোপের কোন দেশ কতটা নির্ভরশীল
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর ৪০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ২৭ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে আসে। এ জন্য ইইউ দেশগুলো বছরে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ইউরো রাশিয়াকে পরিশোধ করে থাকে।
ইউরোপে রাশিয়ার তেল গ্যাসের রপ্তানির পরিমাণ দেশভেদে কমবেশি রয়েছে। জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
২০২০ সালে রাশিয়া থেকে নেদারল্যান্ডস দৈনিক পাঁচ লাখ ৪৯ হাজার ৪০০ ব্যারেল অপরোশোধিত তেল আমদানি করেছে। জার্মানি দৈনিক পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ ব্যারেল, পোল্যান্ড তিন লাখ ২৮ হাজার ৪০০ ব্যারেল আর হাঙ্গেরি ৭৬ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করেছে।
২০২০ সালে রাশিয়া থেকে জার্মানি ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ঘন মিটার প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করেছে। ইতালি আমদানি করেছে ২৯ দশমিক দুই বিলিয়ন ঘন মিটার, বেলারুশ করেছে ১৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন ঘন মিটার আর তুরস্ক করেছে ১৬ দশমিক দুই বিলিয়ন ঘন মিটার।