রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাইয়েফ
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তাইয়েফ। জন্মসূত্রে তাইয়েফ ইউক্রেনের নাগরিক। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
তায়েফের বয়স আঠারো। সবে ভর্তি হয়েছেন কিউভেক্সি টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে। তাঁরা বাবা হাবিবুর রহমান ৩০ বছর ধরে ইউক্রেনে থাকেন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস গাজীপুরের কাপাশিয়ায়। হাবিবুর রহমান ভালোবেসে বিয়ে করেছেন ইউক্রেনের এক নারীকে। তাঁদের দুই ছেলে—তাইয়েফ ও মোহাম্মদ কারিম।
রুশ বাহিনী ইউক্রেন আক্রমণ করার পরপরই তাইয়েফ সিদ্ধান্ত নেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার। মা-বাবাকে বলেন, ‘আমি যুদ্ধে যাব, আমার দেশকে রক্ষা করব।’
হাবিবুর রহমান অবাক হন ছেলের কথা শুনে। কিন্তু, ভাবেননি সত্যি সত্যি ছেলে যুদ্ধে চলে যাবে।
হাবিবুর রহমান অনেকদিন ধরে কাপড়ের ব্যবসা করেন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ শহরে। একদিন সকাল বেলা উঠে দেখেন ছেলে বাড়ি নেই, যুদ্ধে চলে গেছে। মন খারাপ হলো তাঁর। মায়ের চোখেও পানি। ছোট ভাই কারিম কাঁদছে। ভয়েস অব আমেরিকাকে এসব তথ্য জানান হাবিবুর রহমান নিজেই।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি চিন্তিত। মন খারাপ হয়। পরক্ষণেই ভাবি—তাইয়েফ তো দেশের জন্যই যুদ্ধ করতে গেছে।’
চল্লিশ মিলিয়ন মানুষের দেশ ইউক্রেন ২০ লাখ মুসলমান রয়েছে। হাবিবুর জানান, তাঁর ছেলে তাইয়েফ এখন কিয়েভ থেকে ১৫০ মাইল দূরে রয়েছে। সে রীতিমতো একজন সৈনিক। গায়ে সেনাপোশাক। কাঁধে ৯ এমএম রাইফেল। হাতে মোবাইল ফোন।
গত বুধবার সর্বশেষ তাঁর সঙ্গে তাইয়েফের কথা হয়। ছেলে তাঁকে বলেছে, ‘রণাঙ্গনে আছি। ভয় পেয়ো না। আমি দেশের জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব।’
হাবিবুর বলেন, যুদ্ধের তীব্রতা যত বাড়ছে, ততই কেন জানি মনে হয়, ছেলের সঙ্গে ফের দেখা হবে তো! তিনি জানান, এ মুহূর্তে ইউক্রেন ছাড়ার কথা ভাবছেন না তিনি। যদিও খাওয়া-দাওয়ার সংকট রয়েছে। জানালেন, গত বুধবার তিন কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে কিছু আলু আর রুটি সংগ্রহ করেছেন।