রোহিঙ্গাদের নিয়ে সৃষ্ট নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়ে ঢাকা-প্যারিসের মতবিনিময়
দেশের আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা সংকট থেকে সৃষ্ট সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা তুলে ধরে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এই সংকট নিরসনে গঠনমূলক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় এক বৈঠকে শেখ হাসিনা এই আহ্বান জানান।
এ সময় দুই দেশই বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল নিশ্চিত করার এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিয়ানমারে তাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে।
নিজ দেশে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদারতাকে স্বাগত জানিয়েছে ফ্রান্স।
উভয় দেশই রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশের ওপর সৃষ্ট চাপের কথা উল্লেখ করেছে। বিশেষ করে ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকার মানুষদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার এক সরকারি সফরে ফ্রান্স যান। এ সময় দুই দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থার (এএফডি) দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারত্বকে স্বাগত জানিয়েছে।
এএফডির কার্যক্রমের মাধ্যমে এবং বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন কৌশলের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পাশাপাশি সমুদ্র অর্থনীতি, জ্বালানি ও পানি খাতে অব্যাহত সমর্থন অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ফ্রান্স।
উভয় পক্ষই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং একটি পানি শোধনাগার স্থাপনের জন্য ক্রেডিট সুবিধা চুক্তি স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়েছে।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ-২৬ এ অংশ নেওয়ার পর ফ্রান্স এবং বাংলাদেশ ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রার অংশ হিসেবে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহযোগিতা জোরদার করার জন্য তাদের যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ফ্রান্স ‘জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামে’ বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে। দুই দেশই প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অধীনে প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নের জন্য কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
ফ্রান্স প্রাসঙ্গিক ফরাসি প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও সামরিক পেশাজীবীদের জন্য বিশেষ কোর্স প্রদানে সম্মত হয়েছে।
উভয় দেশই বাংলাদেশে ফরাসি ভাষা এবং ফ্রান্সে বাংলা ভাষার ব্যবহার প্রচারে তাদের আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছে।
উভয় পক্ষই নিশ্চিত যে এই সফর ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।