সিউলের ভিডিও শেয়ারকারীদের মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে পিয়ংইয়ং
দক্ষিণ কোরিয়ার ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ায় মৃত্যুদণ্ডের শিকার হচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার জনগণ। এমনকি, মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধ ও ধর্মীয় উসকানির জন্যও মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে পিয়ংইয়ং। এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) গবেষকরা দাবি করেন, নাগরিকদের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে পিয়ংইয়ং। একইসঙ্গে বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী ও শত্রু হিসেবে গণ্য হওয়া দক্ষিণ কোরিয়া। সিউলের ইউনিফিকিশন মন্ত্রণালয় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ৪৫০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনের গবেষণায় অংশ নিয়েছে পাঁচশ’র বেশি উত্তর কোরিয় নাগরিক, যারা কিনা ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছেন।
প্রতিবেদনে দক্ষিণ কোরিয়ার মন্ত্রণালয়টি বলছে, ‘উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের জীবনের অধিকার ব্যাপকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। মাদক-অপরাধ, দক্ষিণ কোরিয়ার ভিডিও শেয়ার, ধর্মীয় ও কুসংস্কারমূলক কার্যকলাপের অভিযোগে কঠোর রায় দিচ্ছে পিয়ংইয়ং। এগুলোতে সাধারণত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় না।’
বিষয়টি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স। তবে, জাতিসংঘের তদন্ত ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিবেদনগুলো একই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয় মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির ক্ষমতাসীনদের উৎখাতে এমনটি করা হচ্ছে বলে দাবি পিয়ংইয়ংয়ের।
ওই প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার জনসাধারণের মৃত্যুদণ্ড, নির্যাতন ও নির্বিচারে গ্রেপ্তারসহ সম্প্রদায়, বন্দীশিবির এবং অন্যত্র সেক্টরে ব্যাপকভাবে রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বাধীন অধিকার লঙ্ঘনের বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে সিউলের মন্ত্রণালয় বলে, উত্তর কোরিয়ার বন্দিশিবিরগুলোতে মৃত্যু ও নির্যাতন নৈমিত্তিক ব্যাপার। এমনকি, দেশটি থেকে পালাতে যাওয়াদের আটক করে খুব দ্রুত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে।
রয়টার্স বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিবেদনটি এমন সময়ে এসেছে যখন কিনা তাদের প্রতিবেশী দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে বাড়ানোর দৌড়ে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ন সুক ইওল বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার ভয়াবহতা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও জানানো উচিত। পিয়ংইয়ং তার পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের এই সময়ে এক পয়সাও প্রাপ্য নয়।’
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ৩৪ হাজার উত্তর কোরিয় জনগণ বাস করে। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে পিয়ংইয়ং সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করায় দেশটি থেকে পালানোর সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে। ২০২১ সালে সালে মাত্র ৬৩ উত্তর কোরিয় জনগণ চুরি সীমান্ত পেরিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার পৌঁছেছে। আর পরের বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৭।