সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত
সিঙ্গাপুরে নতুন করে তিনজন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাকি দুজন সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা। এ নিয়ে সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৩ জনে। গতকাল রোববার রাতে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ খবর জানানো হয়েছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৯ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি নাগরিক সম্প্রতি চীন সফর করেননি। সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থাতেই তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিসেস-এর (এনসিআইড) একটি কক্ষে আলাদা করে রাখা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
এ ছাড়া নতুন করে আক্রান্ত অন্য দুই ব্যক্তিও সম্প্রতি চীন সফর করেননি। তবে তাঁদের মধ্যে একজন ২৬ জানুয়ারি মালয়েশিয়া সফরে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্য থেকে এরই মধ্যে ছয়জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। এ ছাড়া বাকিদের মধ্যে ছয় জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৮ জনে। এ ছাড়া আজ সোমবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ১৭১ বলে জানা গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে চীনে নতুন এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই নাগরিকও। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৯৭ জনের।
এদিকে চীন ছাড়াও অন্তত ২৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই করোনাভাইরাস। এর মধ্যে হংকং ও ফিলিপাইনে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রকোপ থামাতে গবেষণা চলছে আন্তর্জাতিকভাবে। এ ছাড়া এ ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে উৎপত্তিস্থল উহানে নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের সতর্কতা। বিশেষ ও সাধারণ হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা। এ ছাড়া অন্যান্য রোগের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে পরিণত করা হয়েছে সাময়িক হাসপাতালে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে চিকিৎসকদের বক্তব্য, তাঁরা বেশিরভাগই সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। হুশেনশান হাসপাতালের চিকিৎসক টেং ইয়ু বলেন, ‘রোগীরাও আমাদের মতোই সাহসী।’
এদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নানা ভুল তথ্য প্রচার হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ধরনের ভুল তথ্যের বিস্তার কীভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে বৈঠকে বসেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কর্তা ব্যক্তিরা। ভুল বা বিকৃত তথ্যগুলো রোগের প্রকোপ কমানোর বদলে বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয় বলে আক্ষেপ করেন তাঁরা।
ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রস আধানম বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েন চিকিৎসা কর্মীরা, যাঁরা দুঃসাহসিকভাবে পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন।’
এদিকে চীনে এই মৌসুমটা সচরাচর উৎসবের হলেও ক্রমাগত মৃত্যুর মিছিলে, বর্তমানের বাতাস অনেক ভারী। তাই, সবাইকে কঠোর ও দৃঢ় থাকার আহ্বান জানিয়ে আলোকসজ্জা করা হয়েছে উহানের সুউচ্চ দালানগুলোতে। দেওয়া হচ্ছে নানা ইতিবাচক বার্তা।