সু চির বক্তব্যে শুনানি শেষ, দ্রুত উভয় পক্ষকে সিদ্ধান্ত জানাবে আইসিজে
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) শিগগিরই রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের শুনানি শেষে আদালতের প্রেসিডেন্ট আবদুল কাউয়ি আহম্মেদ ইউসুফ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যত শিগগির সম্ভব আদালত তাঁর সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষকে জানিয়ে দেবেন। তাঁর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই শুনানি শেষ হয়েছে।
তবে ঠিক কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত জানানো হবে, এমন নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বলেননি ১৭ সদস্যের প্যানেলের প্রধান ইউসুফ।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে শুনানির তৃতীয় দিনেও মিয়ানমারের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন সে দেশের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। তিনি বলেন, তাঁরা বিষয়টির আন্তর্জাতিকীকরণ চান না। দেশের সামরিক আদালতেই এ-সংক্রান্ত বিচারের সুযোগ চান। সু চি তাঁর চূড়ান্ত আবেদনে বলেন, গাম্বিয়ার মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হোক। অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও প্রত্যাখ্যান করতে বলেন তিনি।
সু চির দাবি, তাঁদের সরকার সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় কাজ করছে এবং তাঁরা তা চালিয়ে যেতে চান। তিনি বলেন, ‘আদালতের কাছে আমরা সে সুযোগ চাই।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি আদালতে বলেন, ‘২০১৬-১৭ সালের মতো জাতিগত সংঘাত আবার শুরু হোক, এমন কিছু আমরা চাই না।’
সু চি তাঁর চূড়ান্ত আবেদনে বলেন, ‘শুনানির সময়ে আদালতে পেশ করা যুক্তির আলোকে মিয়ানমার আদালতের কাছে দাবি করছে যে গাম্বিয়ার মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হোক। এবং তার ফলে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও খারিজ করা হোক।’ এরপরই বক্তব্য শেষ করেন সু চি।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।
গত মঙ্গলবার শুনানির প্রথম দিনে অং সান সু চির উপস্থিতিতে রোহিঙ্গা গণহত্যার সারাংশ তুলে ধরেন আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদো। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিবেকের কালিমা মোচনে আর দেরি করা চলে না।’
এর পর গত বুধবার শুনানির দ্বিতীয় দিনে আদালতে সু চি তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন।
গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আরো বলেন, ‘একমাত্র এই আদালতই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে, আশা জাগাতে পারে। আইসিজে মিয়ানমারকে বলুক যে এখনই রোহিঙ্গা শিশুদের হত্যা বন্ধ করতে হবে, নৃশংসতার অবসান ঘটাতে হবে।’
গাম্বিয়ার এমন বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা।