‘স্বেচ্ছায়’ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সংগীতশিল্পীর মৃত্যু
মধ্য ইউরোপের দেশ চেক রিপাবলিকের লোকসংগীত শিল্পী হানা হোরকা (৫৭) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাঁর ছেলে বলছেন, ‘মা স্বেচ্ছায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।’
হানার ছেলে জ্যান রেক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, জ্যান ও তাঁর বাবা বড়দিনের পর করোনায় আক্রান্ত হন। বিভিন্ন জায়গায় প্রবেশের ছাড়পত্র পাওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে থেকে করোনায় আক্রান্ত হন হানা হোরকা।
চেক রিপাবলিকে সিনেমা, পানশালা, ক্যাফেসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানস্থলে যেতে টিকা দেওয়ার প্রমাণপত্র অথবা সাম্প্রতিক করোনা নেগেটিভ সনদ লাগে। জ্যান রেক বলছেন, চলাফেরায় বিধিনিষেধে শিথিলতা পাওয়ার আশায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁর মা।
‘অ্যাসোন্যান্স’ নামের চেক রিপাবলিকের পুরোনো ফোক সংগীত গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন হানা হোরকা।
ইচ্ছা করেই ছেলে ও স্বামী থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। যদিও আক্রান্ত হওয়ার পর গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সংগীতশিল্পী হোরকা জানিয়েছিলেন তিনি সেরে উঠছেন। এর দুদিন পর রোববারই মারা যান তিনি।
সুস্থ হয়ে উঠছেন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হোরকা লিখেছিলেন, ‘এবার থিয়েটার, সনা ও কনসার্ট হবে।’
রোববার সকালে হাঁটতে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন হোরকা। এমন সময় পিঠে ব্যথা শুরু হলে শয়নকক্ষে যান এবং এর ১০ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, হানা হোরকা টিকাপ্রাপ্ত ছিলেন না। তবে, তিনি টিকা বিষয়ক ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন না। তাঁর ছেলে ও স্বামীর করোনার টিকা দেওয়া রয়েছে।
তবে, ছেলে জ্যান রেক মায়ের মৃত্যুর বর্ণনা দেওয়ার সময় তেমন আবেগাক্রান্ত হচ্ছিলেন না। তিনি বরং এ ঘটনা জানিয়ে লোকজনকে টিকা দেওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে চাচ্ছিলেন। রেক বলেন, ‘বাস্তব জীবন থেকে পাওয়া উদাহরণ পরিসংখ্যান থেকে অনেক শক্তিশালী।’
এক কোটি সাত লাখ জনসংখ্যার চেক রিপাবলিকে গতকাল বুধবার রেকর্ডসংখ্যক ২৮ হাজার ৪৬৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশই বর্তমানে করোনার নতুন ঢেউয়ে পর্যুদস্ত। কোভিড রোগীর ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে এসব দেশের হাসপাতালগুলো।