হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে মার্কিন সিনেটে বিল পাস
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকে সমর্থন এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে চীনের সহিংসতার বিষয়ে সতর্ক করার জন্য মার্কিন সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে একটি বিল পাস হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এই বিলটি পাস হয়। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে আজ বুধবার এক বিবৃতিতে হংকংয়ের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তক্ষেপ না করার জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন সরকার।
হংকং কর্তৃপক্ষ বলছে, এ বিলটির মাধ্যমে হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে চুক্তি করার সময়ে এসে এই বিলটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে চীন।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলের একটি কঠিন সময়ে এসে বিলটি পাস হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসন চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির প্রথমে ধাপে এসে পৌঁছেছে।
ইউনাইটেড ফার্স্ট পার্টনার্সের এশিয়ান গবেষণার প্রধান জাস্টিন টাং বলেছেন, ‘চীন বিষয়টি ভালোভাবে নেবে না। এর ফলে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ বিষয়ে আলোচনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীদের চাওয়ার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ একটি বিল পাস করে। এ আইনের লক্ষ্য হচ্ছে, আধা-স্বায়ত্তশাসিত ওই ভূখণ্ডের বেসামরিক নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করা।
হংকং হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট বিলটি মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয়পক্ষের সমর্থনে পাস হয়েছিল। কংগ্রেসে সাধারণত এমনটা ঘটে না।
এদিকে, বিলটি যদি আইনে পরিণত হয়, তাহলে এর বিরুদ্ধে পাল্টা কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল চীন। নিজেদের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা চলতে থাকায় ‘বিদেশি শক্তিকে’ দায়ী করে আসছে চীন।
এ বিলের প্রধান উদ্যোক্তা রিপাবলিকান প্রতিনিধি ক্রিস স্মিথ পরিষদে বলেছিলেন, ‘হংকংয়ের অধিকার ও স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করা হবে—সরকারের এমন প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থাসহ সম্মান জানাতে আমরা চীনের প্রেসিডেন্ট ও হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী নেতাদের চীন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার আইনের বিরুদ্ধে হংকংয়ের রাজপথে লাখ লাখ মানুষ নেমে আসে।
গণতন্ত্রপন্থীদের মাসব্যাপী এ আন্দোলন সারা হংকংয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এ ভূখণ্ডের সক্রিয় কর্মীরা বলছেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে চীনে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে হংকংয়ের ১৯৯৭ সালের দিকনির্দেশনাসংবলিত একটি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও বেইজিং ভূখণ্ডটির স্বাধীনতা হরণ করছে।
নগরী কর্তৃপক্ষ মানবাধিকার ও আইনের শাসন মেনে চলছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর প্রতিবছর এমন সনদ না দিলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হংকংয়ের বিশেষ বাণিজ্যিক মর্যাদার অবসান ঘটাবে হংকং রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট।