হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিল মিয়ানমারের পুলিশ, আজও নিহত ২
মিয়ানমারজুড়ে ধর্মঘট ঠেকাতে হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির পুলিশ। দেশটির ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো আজ সোমবার থেকে ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার ঘোষণার পরপরই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এমন তৎপরতা শুরু করেছে।
আজ সোমবারও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। কাচিন রাজ্যের রাজধানী শহর মিয়িতকায়িনায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। পুলিশ সেখানে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়েছে।
অন্যদিকে, গতকাল রোববার রাত ৮টা থেকে কারফিউ শুরু হলে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াংগুনে গোলাগুলি ও গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যায়। হাসপাতাল এলাকাগুলোতেও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়েছে, ঘটেছে গোলাগুলির ঘটনা। হাসপাতালের কর্মী ও অ্যাম্বুলেন্সেও হামলা করেছে পুলিশ। এ ছাড়া রোববার রাতভর বিক্ষোভকারীদের ধরতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করেছে পুলিশ।
এদিকে, মিয়ানমারে হতাহতের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আজ সোমবার অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিজ পেনি এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
যদিও লন্ডনভিত্তিক বার্মা ক্যাম্পেইনের নির্বাহী পরিচালক আন্না রবার্টস জানান, অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও ১২টি দেশ মিয়ানমার মিলিটারির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নেতৃত্বে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে চলছে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ। রক্তক্ষয়ী এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক এবং আহত হয়েছেন অনেকে। সেনা অভ্যুত্থানের অবসান এবং দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ সামরিক বাহিনীর হাতে আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৬ জনের বেশি। তবে, অন্যান্য প্রতিবেদনে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল গত বুধবার। মিয়ানমারের বিভিন্ন নগর ও শহরে সেদিন ৩৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন।