২০১৫ সালের প্যারিস হামলার ঐতিহাসিক বিচার শুরু
২০১৫ সালের নভেম্বরে প্যারিসের অন্তত ছয়টি স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১৩০ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত ২০ জনের ঐতিহাসিক বিচার শুরু করেছে ফ্রান্স।
কড়া নিরাপত্তায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে পালাই ডি জাস্টিস আদালতে বুধবার এ বিচার শুরু হয়েছে। খবর বিবিসির।
হামলার ঘটনায় একমাত্র জীবিত সন্দেহভাজন সালেহ আবদেসলামসহ ১৪ জনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আর ছয়জনের বিচার চলছে তাদের অনুপস্থিতিতে, যাদের বেশিরভাগই মৃত বলে ধারণা করা হয়।
ফ্রান্সের আধুনিক যুগের ইতিহাসে এই বিচারকে বলা হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিচারকাজ। আগামী নয় মাসব্যাপী এই ম্যারাথন বিচারকাজে ১৪৫ দিন ধরে শুনানি চলবে। আইনজীবী থাকছেন ৩৩০ জন। আরও থাকছেন হামলার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়াদের স্বজনরা মিলে এক হাজার ৮০০ জন। সাক্ষ্য নেওয়া হবে প্রায় ৩০০ প্রত্যক্ষদর্শীর। এর মধ্যে আছেন, হামলার সময়কার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলান্দও।
২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কনসার্ট হল, রেস্তোঁরা, বারসহ অন্তত ছয়টি স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১৩০ জন নিহত হয়েছিল। এ ঘটনায় সাতজন হামলাকারীও মারা যায়। হামলার দায় স্বীকার করেছিল জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
হামলার পর প্রায় চার মাস পালিয়ে ছিলেন সালেহ আবদেসলাম, যাকে হামলার একমাত্র জীবিত সন্দেহভাজন বলে মনে করা হয়।
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে তিনি পরে গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের আগে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ চালানোর ঘটনায় আবদেসলামকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১৬ সালের ১৮ মার্চ ব্রাসেলসের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে আবদেসলামকে আটক করা হয়েছিল। ২৭ এপ্রিল তাকে ফরাসি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর ফ্রান্সের কারাগারে আটক থাকেন তিনি।
বুধবার সকালে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে পুলিশের গাড়িতে করে সন্দেহভাজনদের আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মুখে ছিল মাস্ক। দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
আবদেসলামকেই হামলার হোতা বলে মনে করা হয়। তার সঙ্গে আদালতে হাজির হওয়া অন্য ১৩ জনের বিরুদ্ধে অপরাধের নানা অভিযোগ আছে। তারা হামলার অর্থ জোগানো এবং পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন এবং হামলা চালানোর জন্য বন্দুক ও গাড়ি দিয়ে সহায়তা করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে।