২০৩৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান বরিস জনসন
২০৩৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চান যুক্তরাজ্যের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। শনিবার তিনি বলেছেন, আগামী দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার লক্ষ্য রয়েছে তাঁর। যদিও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ব্রিটিশ রাজনীতিতে বরিস জনসন সম্প্রতি অনেকটা কোণঠাসা হয়েছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবিও রয়েছে।
তবে, সবকিছু কাটিয়ে ব্রিটিশ এ প্রধানমন্ত্রী যদি আগামী দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে সক্ষম হন, তাহলে সেটি তাঁকে যুক্তরাজ্যে গত ২০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নেতায় পরিণত করবে। আজ রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন দল কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যে অনাস্থা ভোটে বিজয়ী হন বরিস জনসন। বেশ কয়েকটি কারণে জনসন চাপের মুখে ছিলেন, যার মধ্যে একটি বড় কারণ হচ্ছে—কোভিড লকডাউনের সময় ডাউনিং স্ট্রীটে বিধিনিষেধ ভেঙে পার্টি করতে দেওয়া।
দলের মধ্যে হওয়া এ অনাস্থা ভোটাভুটিতে জনসনের পক্ষে ভোট পড়ে ২১১টি। বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৪৮টি। এ ফলাফলের সুবাদে আগামী এক বছর ব্রিটিশ এ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলের মধ্যে থেকে আর কোনো ধরনের অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না।
রয়টার্স বলছে, চলতি মাসের শুরুতে কনজারভেটিভ পার্টির আইন প্রণেতাদের কাছে আস্থা ভোটে টিকে গেলেও তার দলেরই ৪১ শতাংশ সংসদীয় সহকর্মী জনসনকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে বিভ্রান্ত করার জন্য বরিস জনসনের বিরুদ্ধে এখন তদন্তও চলছে।
এতকিছুর পরও বরিস জনসন বলছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদে তিনি তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্বপালন করতে চান। তাঁর ভাষায়, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতে, যুক্তরাজ্যের আইনি ও অভিবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার জন্য ২০৩০-এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকতে চান তিনি।
কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সফরের শেষ দিনে রুয়ান্ডায় সাংবাদিকদের জনসন বলেন, ‘আমি এ মুহূর্তে তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী থাকার বিষয়ে সক্রিয়ভাবে চিন্তা করছি এবং আপনি জানেন, তখন কী হতে পারে। তবে, যখন বিষয়টি সামনে আসবে তখন আমি এটি পর্যালোচনা করবো।’
তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া মানে তিনি ঠিক কী বোঝাতে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে জনসন বলেন, ‘তৃতীয় মেয়াদ সম্পর্কে ... এটি ২০৩০ এর দশকের মাঝামাঝি।’
রয়টার্স বলছে, জনসনকে অবশ্যই ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং (২০৩০ এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে) ২০২৯ সালের মধ্যে তৃতীয় নির্বাচনে জয়ের প্রয়োজন হবে।
অবশ্য সবকিছু কাটিয়ে বরিস জনসন যদি ২০৩১ সালের শুরুর দিকেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকতে সক্ষম হন তাহলে ১৮১২ সাল থেকে ১৮২৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্বপালন করা রবার্ট ব্যাংকস জেনকিনসনের পর একটানা দীর্ঘসময় ধরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করা মার্গারেট থ্যাচারের রেকর্ডকে হারাবেন তিনি।