কুয়েতে বাংলাদেশিসহ সাতজনের ফাঁসি কার্যকর
কুয়েতে এক বাংলাদেশি ও রাজপরিবারের এক সদস্যসহ সাতজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
স্থানীয় সময় আজ বুধবার ভোরে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। কুয়েতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কুনার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে কুয়েতের রাজপরিবারের সদস্য শেখ ফয়সাল আবদুল্লাহ আল জাবের আল সাবাহ, বাংলাদেশি শাহ আলমসহ মিসর, ইথিওপিয়া ও ফিলিপাইনের নাগরিক রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। এই সাতজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন নারী।
ফাঁসি কার্যকর হওয়া বাংলাদেশি মো. শাহ আলম ঢাকার কদমতলী থানাধীন ফরিদাবাদ এলাকার ৮২ নম্বর রজব আলী সরদার রোডের মো. সানোয়ার হোসেনের ছেলে। কুয়েতে দুর্গামায়া নামের এক নেপালি নারীকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৮ নভেম্বর শাহ আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলায় ২০১৩ সালে শাহ আলমের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেন কুয়েতের উচ্চ আদালত। আজ ভোরে এ রায় কার্যকর করা হয়।
এ ব্যাপারে কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর আবদুল লতিফ খান জানান, দুই বছর ধরে নেপাল ও বাংলাদেশ দূতাবাস অনেক চেষ্টা করেও শাহ আলমের বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগকারীকে খুঁজে পায়নি। ওই নেপালি নারী ইরানি এক মালিকের অধীনে কাজ করতেন। সেই ইরানি মালিকও কুয়েত ছেড়ে চলে যান।
কাউন্সিলর আবদুল লতিফ খান বলেন, অভিযোগকারীকে পেলে ব্লাড মানি (অভিযোগকারীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ) দিয়ে হয়তো শাহ আলমকে বাঁচানোর চেষ্টা করা যেত। নেপাল ও বাংলাদেশ দূতাবাস যথেষ্ট চেষ্টা করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শাহ আলমের সঙ্গে শেষ দেখা করে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। শাহ আলমের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর মায়ের সঙ্গে ফোনে প্রায় পাঁচ মিনিট কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি তাঁর ছোট ভাইকে ভালো করে দেখে রাখতে মাকে অনুরোধ করেন। কাউন্সিলর আবদুল লতিফ খান এই তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে কুয়েতের সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, রাজপরিবারের সদস্য শেখ ফয়সাল আবদুল্লাহ আল জাবের আল সাবাহকে ২০১০ সালে রাজপরিবারের সদস্য তাঁর এক ভাতিজাকে হত্যার দায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়।
এ ছাড়া স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের অনুষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়ে ৪০ জনের বেশি নারী ও শিশু হত্যার দায়ে নুসরা আল এনজি নামের এক কুয়েতি নারীকেও ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
কুয়েতে সর্বশেষ ২০১৩ সালে তিনজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।