হিটলারের আঁকা ছবি রেকর্ড দামে বিক্রি
বিংশ শতাব্দীতে জার্মান জাতির নতুন আদর্শের নায়ক ছিলেন তিনিই। তবে তাঁর সেই আক্রমণাত্মক আদর্শ বিশ্বে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধিয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধের জন্য ইতিহাস এককভাবে দায়ী করে এডলফ হিটলারকে। তবে অনেকেরই হয়তো জানা নেই ছোটখাটো গড়নের এ মানুষটি কিন্তু প্রথম জীবনে শিল্পী হতে চেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন রংতুলিই হবে তাঁর জীবনের অবলম্বন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পথ পাল্টে রাজনীতিই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যান-জ্ঞান।
তবে একনায়কের প্রথম জীবনের সেই শিল্পকর্মগুলো কিন্তু একেবারে হারিয়ে যায়নি। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের তথ্যমতে, একজন তরুণ শিল্পী হিসেবে ভিয়েনা একাডেমি অব আর্টে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন এডলফ হিটলার। কিন্তু সেখান থেকে প্রত্যাখ্যাত হন তিনি। তবে এতে না দমে আঁকাআঁকির কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন পুরোদমে। তরুণ বয়সে নিজের চিত্রকর্ম পর্যটকদের কাছে বিক্রি করতেন হিটলার। তাঁর সেই চিত্রকর্মের বেশ কয়েকটি সম্প্রতি নিলামে উঠেছে। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বাভারিয়া অঙ্গরাজ্যের নুরেমবার্গভিত্তিক নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েডলার অকশনিয়ারস এ নিলাম আয়োজন করে।
নিলামে হিটলারের জলরঙের মোট ১৪টি চিত্রকর্ম তিন লাখ ৯১ হাজার ইউরো বা চার লাখ ৪৪ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছে। জলরঙের সাহায্যে বাভারিয়ার নুয়েশওয়্যানস্টাইন প্রাসাদের যে চিত্রকর্ম সৃষ্টি করেছিলেন হিটলার, সেটি সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়েছে। চীনের এক ক্রেতা এক লাখ ১৪ হাজার ডলারে শিল্পকর্মটি কিনে নেন।
নিলামকারী প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে ছবিগুলোর বয়স প্রায় ১০০ বছর। হিটলার এগুলো এঁকেছিলেন ১৯০৪ থেকে ১৯২২ সালের মধ্যে। প্রতিটি চিত্রকর্মের নিচে রয়েছে হিটলারের স্বাক্ষর এবং তারিখ। ওয়েডলার অকশনিয়ারসের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে।
এর আগে গত নভেম্বরে হিটলারের তরুণ বয়সে জলরঙে আঁকা একটি ছবি প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার ইউরোতে বিক্রি হয়েছিল। ১৯১৪ সালে মিউনিখের সিটি হলের সেই ছবিটি এঁকেছিলেন হিটলার। তবে ক্রেতার পরিচয় তখন জানা যায়নি। নিলামকারী প্রতিষ্ঠান জানিয়েছিল, ছবিটির ক্রেতা নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চেয়েছেন।
হিটলারের শিল্পকর্মগুলো মেধার বিচারে সাধারণভাবে তেমন উচ্চ মার্গের হিসেবে পরিগণিত হয় না। বিতর্কিত হওয়া সত্ত্বেও, প্রতি বছর হিটলারের নিলামে তোলা শিল্পকর্মগুলো লাখ লাখ ডলারে বিক্রি হয়ে থাকে। জার্মানিতে শিল্পকর্মগুলো বিক্রি করার অনুমতি আছে। তবে শর্ত হলো, নাৎসিদের কোনো প্রতীক অঙ্কিত থাকলে, তা নিলামে তোলার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।