এশীয়দের টয়লেট ব্যবহার শেখাচ্ছে সুইজারল্যান্ড
এশিয় পর্যটকদের নিয়ে নাকি খুব অসুবিধায় পড়েছে সুইজারর্যান্ডের রেলওয়ে বিভাগ। এমনই দাবি করেছেন দেশটির রেলওয়ে বিভাগের পরিচালক মারসেল ফিউরা। তিনি জানিয়েছেন, বারবার টয়লেট পরিষ্কার করতে করতে অবস্থা জেরবার রেলওয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের। আর টয়লেট অপরিষ্কারের মূল কারণ নাকি এশীয়রা!
সুইজারল্যান্ডের রেলওয়ের প্রধান ফিউরা জানান, এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা পর্যটকরা সঠিকভাবে টয়লেট ব্যবহার করেন না। ফলে প্রতিনিয়ত সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “গত বছর ট্রেনগুলোর টয়লেটে লেখা হয়েছিল, ‘দয়া করে টয়লেটে বসুন, দাঁড়িয়ে মলত্যাগ করবেন না’, ‘হাত দিয়ে ফ্লাশ চালান, পা দিয়ে নয়।’ কিন্তু এসব পরামর্শে কোনো ফল হয়নি। বরং কমোড ব্যবহারের নিয়ম না মেনে উদ্ভট নিয়মে টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে কয়েকজন পর্যটক দুর্ঘটনারও শিকার হয়েছেন।”
সুইজারল্যান্ডের রেলওয়ের প্রধান বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য সুইজারল্যান্ডের খ্যাতি দুনিয়াজোড়া। আর তাই সুইসরা এই নোংরা কর্মকাণ্ড মেনে নিতে পারছে না।’
মারসেল ফিউরা আরো জানান, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে এশীয়দের টয়লেট ব্যবহার করার প্রকৃত নিয়ম শেখাতে একটি পোস্টার ট্রেনের টয়লেটে টাঙিয়েছে রেলওয়ে বিভাগ। পোস্টারটি হাই-কমোড ব্যবহারের নিয়ম সংক্রান্ত। এতে ছবি দিয়ে বোঝানো হয়েছে, টয়লেট কীভাবে ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া টয়লেট পেপার কোথায় ফেলতে হবে, কীভাবে ফ্ল্যাশ করা উচিত- এসব নিয়েও আরেকটি পোস্টার ছেপেছে রেলওয়ে বিভাগ।
আর সেই পোস্টারের ছবিই ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। পোস্টারগুলো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রসিকতাও হচ্ছে দেদার। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে দেশটিতে বসবাসরত এশীয়রা। ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্যাংকার শান্তি পান্ডে ডেইলি মেলকে বলেছেন, এশীয় অঞ্চলের অধিবাসীদের উদ্দেশ্য করে পোস্টারটি দেওয়া হয়েছে। সুইস রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিচু মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ এটি। সুইজারল্যান্ডে যেসব এশীয় লোকজন থাকে কিংবা চলাফেরা করে তারা খুব ভালো করেই জানে কীভাবে হাই-কমোড ব্যবহার করতে হয়। সুইজারল্যান্ডে নিয়মিত ভ্রমণকারী জাপানি ব্যবসায়ী খুরো নাগমিকি বলেছেন, ‘এমন হলে তাঁরা ভ্রমণকারীদের জন্য আলাদা ট্রেনের ব্যবস্থা করলেই পারে।’
তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দাবি, যেহেতু বেশির ভাগ এশীয় অঞ্চলের লোকজন লো-কমোড ব্যবহারে অভ্যস্ত, তাই তারা হাই-কমোড ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বসার একই ধরন অনুসরণ করে থাকে। আর এ বিষয়ে সচেতনতার জন্যই তারা এমন পোস্টার ছাপিয়েছে।