২০১৬ সালে পাকিস্তান সফরে যাবেন মোদি
সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের টানাপড়েনের মাঝে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ রাশিয়ার বাস্কোরতোস্তান প্রদেশের রাজধানী ইউএফএতে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে মিলিত হন। দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ইসলামাবাদ সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রত্যুত্তরে মোদি নওয়াজকে জানান, ২০১৬ সালে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তান যাচ্ছেন তিনি।
বৈঠকে ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্কর। আর পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন দেশটির নিরাপত্তা উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আজ অনুষ্ঠিত বৈঠকের দ্বিতীয় দফায় পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির কথা রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভোজসভায় কথা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। তাঁদের মধ্যে কিছুক্ষণ আলাপচারিতাও হয়। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে দেখা হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু সে সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর কোনো দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্করের সূত্রে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে ২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। বৈঠকে শরিফ দাবি করেন, পাকিস্তানে রাজনৈতিক দল মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টকে (এমকিউএম) ভারত তহবিল সরবরাহ করছে এবং এর কর্মীদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কিন্তু এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রমাণ চেয়েছেন বলে দাবি করেন জয়শঙ্কর।
এদিকে মোদি অভিযোগ করেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে বারবার সীমান্তে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানি সেনা। এ ছাড়া মুখতার নাকভিসহ মুম্বাই হামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কড়া ব্যবস্থা নিতে নওয়াজকে অনুরোধ করেছেন তিনি। এস জয়শঙ্কর আরো জানান, দুই দেশের রাষ্ট্রনেতার বৈঠকে বিস্তারিত বিষয় নিয়ে আজ বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
সম্প্রতি মিয়ানমারে ভারতের সেনা অভিযান এবং ঢাকা সফরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ নিয়ে মোদির মন্তব্যে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর নওয়াজকে ফোনে মোদির রমজানের শুভেচ্ছার পর আবার আলোচনার টেবিলে বসছেন দুই নেতা। তাতে এখনই কোনো ফল না মিলুক, কিন্তু আলোচনার পথ প্রশস্ত হলে সেটাই হবে দুই দেশের কূটনৈতিক সাফল্য- এমনটাই ধারণা কূটনৈতিক মহলের।