হিজাব পরায় মুসলিম নারীকে নিষিদ্ধ করলেন জার্মান বিচারক
হিজাব পরে আদালতে ঢোকায় সিরিয়ার এক মুসলিম নারীকে নিষিদ্ধ করেছেন জার্মানির এক বিচারক। বিচারকের দাবি, আদালতে যেকোনো ধরনের ধর্মীয় পোশাক নিষিদ্ধ।
ওই নারীর আইনজীবী নাজাত আবোকাল জানান, তাঁর মক্কেলের বিবাহবিচ্ছেদের আদেশ জার্মানির ব্রানডেনবার্গ রাজ্যের লুকেনওয়ালদে জেলা আদালতে প্রক্রিয়াধীন। আদালত এক চিঠিতে তাঁকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যদি তিনি আইন মেনে (হিজাব খুলে না আসে) না চলেন, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় বিচারক অবশ্য তাঁর স্বামীকেও আদালতে হাজিরের নির্দেশও দেন।
নাজাত আবোকাল অভিযোগ করে সংবাদমাধ্যম তাগেসপিয়েগেলকে জানান, এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। মুসলিম পোশাক নিয়ে গোটা জার্মানিজুড়ে যে ভয়াবহ বিতর্ক চলছে, তিনি তাকে চ্যালেঞ্জ করবেন।
আবোকালের এক সহকর্মীও বিষয়টি দি ইনডিপেনডেন্টকে নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
লুকেনওয়ালদে জেলা আদালতের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না। আদালত কক্ষে যা ঘটেছে তার দায় সম্পূর্ণ ওই বিচারকের।
জার্মানির পার্লামেন্ট মুসলিমদের বোরকাসহ যেসব পোশাক মুখ ঢেকে রাখে, তা আংশিক নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এ ছাড়া নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে জার্মানির অনেক আদালতে যেকোনো ধর্ম বা রাজনীতির প্রতীক বহনকারী পোশাক নিষিদ্ধ রয়েছে।
তবে আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা সাক্ষী, বাদী, বিবাদী অথবা আইনি প্রক্রিয়ায় জড়িত কারো জন্য কার্যকর নয়। ২০০৬ সালের জার্মানির কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালতের রুলে কোনো বিচারককে কাউকে হিজাব খুলতে বলার অধিকার দেওয়া হয়নি।
ফ্রেডরিক উইলহেলমস বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ক্লাউস এফ গারদিতজ এই চিঠিকে ওই নারীকে হেয় করা এবং তাঁর ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন।