কাতারকে কোনো ছাড় দেবে না সৌদি জোট
অবরোধ ঠেকাতে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশ কাতারকে যে ১৩ দফা বাস্তবায়নের শর্ত দিয়েছিল, তাতে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না বলে দেশগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
স্বতঃস্ফূর্তভাবে শর্ত মানলেই কেবল কাতারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছে সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর।
স্থানীয় সময় রোববার বাহরাইনের রাজধানী মানামায় চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
চলতি বছরের ৫ জুন সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদে মদদ দেওয়ার অভিযোগ এনে কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে সৌদি নেতৃত্বাধীন চারটি দেশ। তবে কাতার তাদের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
এর পর গত ২৩ জুন কাতারকে ১৩টি শর্ত দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে আলজাজিরা টেলিভিশন বন্ধ করা, তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি প্রত্যাহার, মুসলিম ব্রাদারহুড ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা ইত্যাদি রয়েছে। কাতার এসব দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
মানামায় বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে কাতার তাদের দাবিকে অগ্রাহ্য করছে জানিয়ে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেন, ‘কাতার দাবি মেনে নিলে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, যদি কাতার এ বিষয়ে আগ্রহী হয়। তবে এখন পর্যন্ত এটা পরিষ্কার যে কাতার আমাদের দাবির ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। কিন্তু শর্তের ব্যাপারে কোনো সমঝোতা নয়, এ বিষয়ে আমরা তাদের একটুও ছাড় দেবো না।’
একই সংবাদ সম্মেলনে বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ খালিদ বিন আহমেদ আল-খালিফা বলেন, ‘কাতার আমাদের দেওয়া ১৩টি শর্তে মানতে রাজি থাকলে আমরা চারটি দেশ তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। তবে তাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘোষণা করতে হবে যে তারা আর সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদে অর্থায়ন করবে না। অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিজ্ঞাও করতে হবে তাদের।’
এর আগে কাতার সংকট নিরসনে কুয়েত ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যস্থতা কোনো কাজে আসেনি।
তবে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান আল-থানি সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন চার দেশের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার নয় (মানামা বৈঠক প্রসঙ্গে)। তারা কেবল একগুঁয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আসছে। তাদের এ সিদ্ধান্ত যে অবৈধ, তারা এটাও স্বীকার করছে না।’
বৈঠকে কাতারের বিরুদ্ধে নতুন করে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।