সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ২২ জুলাই
ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে করা মামলায় আগামী ২২ জুলাই আদালতে অভিযোগ গঠন করা হবে। আজ বুধবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের বিচারিক হাকিম এম এল নংভি ওই দিন ধার্য করেন।
এই সময় সালাহ উদ্দিন আহমেদের পক্ষের আইনজীবী ও সরকারি আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী আই সি ঝাঁ জানান, এই দিন সালাহ উদ্দিনের মামলায় মূলত কনসিডারেশন অব চার্জে শুনানি হয়। এই শুনানির সময় সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এস পি মহান্ত উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২২ জুলাই এই মামলার অভিযোগ গঠনের যে সিদ্ধান্ত বিচারক জানান, এস পি মহান্ত সেই সিদ্ধান্তে কোনো আপত্তি জানাননি। ফলে ওই দিন সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠিত হবে।
যদিও এই বিষয়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবী এস পি মহান্ত কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বর্তমানে শর্তসাপেক্ষ জামিনে মুক্ত রয়েছেন। তিনি শিলং শহরে পুলিশ বাজারের কাছে একটি কটেজ ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতাকে জামিনের অন্যতম শর্ত হিসেবে শিলং শহর না ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ১২ মে মেঘালয়ের শিলংয়ের গলফ ক্লাব এলাকা থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করে পুলিশ। যদিও সালাহ উদ্দিন দাবি করেছেন, তাঁকে চোখ বন্ধ ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় কে বা কারা এনে ফেলে দিয়ে যায়। এরপর তিনি স্থানীয় মানুষজনের সহায়তায় স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। শিলং পুলিশ প্রথমে তাঁর কথাবার্তায় অসঙ্গতি পেয়ে স্থানীয় মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে। সেখান থেকেই সালাহ উদ্দিন আহমেদ ঢাকায় তাঁর বাড়িতে স্ত্রীর কাছে ফোন করেন। কিন্তু মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসকরা তাঁর কোনো অসঙ্গতি না দেখায় সিভিল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। সেখানে প্রায় নয় দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদের তরফে উন্নত চিকিৎসার দাবি উঠায় উত্তর পূর্ব ভারতের সুপার স্পেশালিস্ট ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সাইন্সেসে ভর্তি করানো হয়। এর মধ্যেই ২২ মে হাসিনা আহমেদ তাঁর স্বামীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়ে শিলং সেশন কোর্টে আবেদন জানান এবং সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ মে বিচারিক হাকিম এল খাড়শিং তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে অনুপ্রবেশের অভিযোগে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন।
এদিকে সালাহউদ্দিন আহমেদ গ্রেপ্তার হওয়ার ২৩ দিনের মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শিলং পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এম লামহারে অনুপ্রবেশের অপরাধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র দাখিল করার দুই দিনের মধ্যেই ৫ জুন সালাহ উদ্দিন আহমেদ শর্তসাপেক্ষে জামিন পান। প্রতি সপ্তাহে তাঁকে স্থানীয় থানায় হাজির হওয়া ছাড়াও শিলং শহর ছেড়ে না যাওয়ার শর্ত দেন বিচারক। এর পরই আগামী ২২ জুলাই সালাহ উদ্দিন আহমেদের ভারতে অনুপ্রবেশ মামলায় চার্জ গঠন হতে চলেছে।
এদিকে ভারতের দণ্ডবিধিতে অনুপ্রবেশের মামলায় সালাহ উদ্দিন আহমেদ দোষী প্রমাণিক হলে তাঁর সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা এবং অর্থদণ্ড হতে পারে বলে শিলং কোর্টের একাধিক আইনজীবী জানিয়েছেন।