মহানবী (সা.)-এর জীবদ্দশায় লেখা কুরআনের সন্ধান!
ব্রিটেনে পাওয়া গেছে এক হাজার ৩৭০ বছর আগের কুরআন! তবে পুরো কুরআন নয়, হাতে লেখা কুরআনের কিছু পৃষ্ঠা। বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে এগুলো পাওয়া গেছে। রেডিওকার্বন পরীক্ষার মাধ্যমে লেখার সময়কাল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন গবেষকরা।
urgentPhoto
গবেষকদের মতে, হজরত মুহাম্মদ (সা.) জীবিত থাকা অবস্থায়ই হয়তো কুরআনের ওই অংশ লেখা হয়েছিল। এটিই হয়তো ‘প্রাচীনতম’ কুরআন।
হিজাজি অক্ষরে হাতে লেখা কুরআনের ওই অংশ ১৯২০ সাল থেকে বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিতে ছিল। লাইব্রেরির পুরোনো গ্রন্থের সেকশনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিভিন্ন পুরোনো গ্রন্থ ও দলিলের অংশে এটি সংরক্ষিত ছিল। গত ১০০ বছরে এটি কারো নজরে আসেনি।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির রেডিওকার্বন এক্সেলারেটর ইউনিটে কুরআনের প্রাচীন অংশটি নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে। রেডিওকার্বন পরীক্ষায় গবেষকরা ৯৫ ভাগ নিশ্চিত, ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি কুরআনের প্রাচীন অংশটি লেখা হয়েছে। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইন্তেকাল করেন।
গবেষকরা মনে করেন, মহানবীর ছয় অহি লেখকের কারো হাতে কুরআনের অংশটি লেখা হতে পারে। খলিফা হজরত ওসমানের (রা.) সময় এটি ব্রিটেনে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করেন গবেষকরা।
কুরআনের অংশটি লেখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ছাগল বা ভেড়ার চামড়া। যাচাই করে তাঁরা বলছেন, কুরআনের প্রাচীন অংশটির সঙ্গে বর্তমানে ব্যবহৃত কুরআনের কোনো পার্থক্য নেই।
বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্রিস্টধর্ম ও ইসলামবিষয়ক শিক্ষক ভেডিভ থমাস বলেন, ‘কুরআনের অংশটি যিনি লিখেছেন, তিনি মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) ভালোভাবেই জানতেন। তিনি হয়তো তাঁকে দেখেছেন। এমনকি কথা বলতেও শুনেছেন। হয়তো তাঁকে ব্যক্তিগতভাবেই চিনতেন।’
ইসলামের প্রথম যুগে লেখা কুরআনের খোঁজ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তারা। বিশেষ সংগ্রহশালার পরিচালক সুসান ওরয়াল বলেন, ‘এটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, পৃথিবীর প্রাচীনতম কুরআনের একটি অংশ আমাদের কাছে আছে। এটি নিয়ে আমরা গর্বিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি বেশ পুরোনো। তবে কখনোই আশা করিনি এটি মহানবীর জীবিত অবস্থায় লেখা হতে পারে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সর্বসাধারণের দেখার জন্য শিগগিরই কুরআনের অংশটি নিয়ে একটি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে।
ব্রিটেনের সর্বোচ্চসংখ্যক মুসলমান বাস করেন বার্মিংহামে। নিজেদের শহরেই কুরআনের প্রাচীনতম একটি অংশ খুঁজে পাওয়ায় খুশি তাঁরা। বার্মিংহাম কেন্দ্রীয় মসজিদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আফজাল বলেন, ‘কুরআনের পাতাগুলো দেখে আমি অত্যন্ত মুগ্ধ হই। আমার চোখেমুখে আনন্দ ফুটে ওঠে। ব্রিটেনের সব মুসলমানই বার্মিংহামে আসবে কুরআনটি একনজর দেখতে।’