রোহিঙ্গা মিয়ানমারের নিজস্ব সমস্যা, নাক গলালে ঝামেলা : রাশিয়া
রোহিঙ্গা সংকট একেবারেই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখানে নাক গলালে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে গোলযোগ ছাড়া আর কিছুই হবে না বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার মারিয়া এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাস।
মারিয়া বলেন, ‘এটা মাথায় রাখা উচিত সার্বভৌম কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করলে তা বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে গোলযোগ ডেকে আনতে পারে।’
মিয়ানমার সরকারের পাশে থাকার কথা জানিয়ে মারিয়া বলেন, রাখাইন রাজ্যে ধর্মীয় চরমপন্থীদের সব রকমের সন্ত্রাসবাদ থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের গঠিত কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ায় মিয়ানমার সরকারকে ধন্যবান জানাই।
এরই মধ্যে দুই হাজার রোহিঙ্গা তাদের বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানান মারিয়া। এ ছাড়া রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে মিয়ানমার খাবার, ওষুধ ও অন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছে বলে জানানো হয় রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
রাশিয়া ছাড়া রোহিঙ্গা সংকটে মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভারে আক্রান্ত বাংলাদেশের পাশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন নিয়ে এগিয়ে এসেছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের’ সংগঠন এআরএসএ এই হামলার দায় স্বীকার করে।
এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। সেখান থেকে পালিয়ে আসার রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে গ্রামের পর গ্রামে হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছে। নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ সাধারণ নাগরিক। জাতিসংঘের জরিপ অনুযায়ী ২৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় চার লাখ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।