জাতিসংঘে কী বললেন সু চির প্রতিনিধি
জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে অনেকটা রাষ্ট্রীয় পরামর্শদাতা অং সান সু চির ভাষাতেই কথা বলেছেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিও। তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের মুসলিমরা এখনো বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে, এ খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। কেন তাঁরা বাংলাদেশে যাচ্ছে, সেটা খুঁজে দেখা প্রয়োজন।’
ভাইস প্রেসিডেন্ট তাঁর বক্তব্যে বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন, মিয়ানমার চেষ্টা করছে রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমানদের পরিস্থিতির উন্নতি করার।
মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের প্রধান আরো বলেন, ‘সেখানে কয়েক দশক ধরে চলা অবিশ্বাস ধীরে ধীরে দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
মিয়ানমার সরকারের দাবি, গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা রাখাইন রাজ্যে দুই ডজনের বেশি পুলিশ ও সেনাক্যাম্পে হামলা চালায়। এ সময় ১২ নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। এর পরই বিদ্রোহীদের ধরার নামে মিয়ানমার সরকার ‘জাতিগত নিধন’ শুরু করে, যার পরিপ্রেক্ষিতে শরণার্থী সংকটের শুরু হয়।
রোহিঙ্গারা রাখাইনে উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদের নির্যাতনের শিকার, তাদের কোনো নাগরিকত্ব নেই, সরকার তাদের বাইরে থেকে আসা জনগোষ্ঠী হিসেবে দেখে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশহীন জনগোষ্ঠী এই রোহিঙ্গারা।
রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরাও অভিযোগ করেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে পুরুষদের হত্যা করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এ নিয়ে সারা বিশ্বে সমালোচনার মুখে পড়ে মিয়ানমার সরকার। দেশটির নেত্রী অং সান সু চি নির্ধারিত জাতিসংঘের অধিবেশনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু জাতিসংঘের অধিবেশন যেদিন শুরু হয়, সেদিন তিনি রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে সু চি বলেন, ‘আমরা রাজ্যে (রাখাইন) শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর।’ সু চির ভাষ্য, বহু মুসলিম (রোহিঙ্গা বলেননি এবং হিন্দুও উচ্চারণ করেননি) পালিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছে এবং তাঁরা চান, এর কারণ অনুসন্ধান করতে। যারা পালিয়েছে, তাদের সঙ্গে কথা বলতে চান এবং যারা থেকেছে, তাদের সঙ্গেও কথা বলতে চান তাঁরা।
একই কথা জাতিসংঘে বলেন সু চির প্রতিনিধি দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হেনরি ভ্যান থিও। তিনিও ভাষণের সময় ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেননি।