হাসির গ্যাসে কিশোরের মৃত্যু!
কিছুক্ষণ নিরুদ্বেগ থাকার জন্য বা সাময়িক আনন্দ পাওয়ার জন্য নাইট্রাস অক্সাইড বা লাফিং (হাসি) গ্যাস গ্রহণ করা ব্রিটেনে বেশ জনপ্রিয়। যদিও ১৮ বছরের কম বয়সীদের কাছে এই গ্যাস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আছে কোথাও কোথাও। তবু দেদারসে বিক্রি হচ্ছে এই গ্যাস আর বিভিন্ন পার্টিতে ব্রিটেনের কিশোরাও বেলুনের মাধ্যমে গ্রহণ করছে নতুন এই আনন্দের প্রক্রিয়া।
এই লাফিং গ্যাস গ্রহণের কারণে ব্রিটেনে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের একটি রাস্তায় পড়ে থাকা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই ঘণ্টা পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের বরাত দিয়ে ব্রিটেনের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে কিশোরটি কোনো একটি পার্টিতে গিয়েছিল। সেখানে সে মদ পান করে এবং প্রচুর পরিমাণে নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে।
তবে তার মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটেনে আনন্দ পাওয়ার বিষয় হিসেবে নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে গেছে। এই গ্যাস গ্রহণ করার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন ‘হিপ্পি ক্র্যাক’।
যদিও এই গ্যাসের ব্যবহার দেশটিতে অবৈধ নয় তবে ইংল্যান্ড ও ওয়ালসে ১৮ বছরের কম বয়সীদের কাছে এই গ্যাস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই গ্যাস গ্রহণ করলে এক ধরনের নিরুদ্বেগ বোধ হয় এবং আনন্দের অনুভূতি হয়। এটি সাধারণত বেলুনের মাধ্যমে নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ করা হয়।
নাইট্রাস অক্সাইডের অপব্যবহারের মাধ্যমে শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। ফলে রক্তে নিম্নচাপ, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. পল সেডন একটি গবেষণায় দেখেছেন যে, ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭.৬ শতাংশই বেলুনের মাধ্যমে লাফিং গ্যাস নেওয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এসব বেলুন বৈধভাবেই বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হয়।
এই গ্যাস গ্রহণের কারণে ২০০৬ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ব্রিটেনে অন্তত ১৭ জন মানুষ মারা গেছে বলে জানা যায়।