গাদ্দাফির বড় ছেলের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
লিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল ইসলাম গাদ্দাফিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন লিবিয়ার একটি আদালত। যুদ্ধাপরাধের দায়ে দেশটির সাবেক ওই একনায়কের বড় ছেলে সাইফসহ নয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল ২০১১ সালে লিবিয়ায় শান্তিপূর্ণ গণবিক্ষোভ দমনের চেষ্টা এবং যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকা।
urgentPhoto
ত্রিপোলির রাষ্ট্রীয় কৌঁসুলি কার্যালয়ের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা সাদিক আল সুর বিবিসিকে জানান, মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বাকি আটজনের সবাই গাদ্দাফি আমলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। এঁদের মধ্যে আছেন সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আবদুল্লাহ আল সেনুসি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাগদাদী আল মাহমুদি। নয় মৃত্যুদণ্ডাদেশ ছাড়াও গাদ্দাফি আমলের আরো আট সাবেক কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ এবং সাতজনের ১২ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। আর নির্দোষ ঘোষণা করা হয় চারজনকে।
সাইফের বিরুদ্ধে সরকারি কৌঁসুলিদের অভিযোগ ছিল, সাইফ আল ইসলাম ২০১১ সালে একনায়ক গাদ্দাফির শাসনের শেষ দিকে স্বৈরশাসনবিরোধী গণবিক্ষোভ দমনের চেষ্টায় সরাসরি ভূমিকা রেখেছিলেন। জোর করে এই বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা শেষ পর্যন্ত গণবিক্ষোভ ও গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
রায় ঘোষণার সময় সাইফ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানিয়েছে বিবিসি। এ জন্য আদালতে সাইফের বিরুদ্ধে ভিডিও মাধ্যমে সব তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া এর আগেও ভিডিওর মাধ্যমে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তিনি। চার বছর ধরে দেশটির জিনতান শহরের সাবেক একটি বিদ্রোহী দলের হাতে বন্দি তিনি। আর ওই বিদ্রোহীরা সাইফকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে সাইফ ছাড়া দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সবাই বিচার বিভাগের হেফাজতে আছেন।
প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা সাদিক আল সুর জানান, আদালতের এ্ই রায়ের বিরুদ্ধে ৬০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করা যাবে। উচ্চ আদালতে এ রায় নিশ্চিত হলেই কেবল রায় কার্যকর করা যাবে।
উত্তর আফ্রিকার প্রতিবেদক রানা জাওয়াদের সূত্রে বিবিসি জানায়, সাইফ লিবিয়ায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন।
এদিকে এই রায় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা লিবিয়ার বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে এই রায়টি বর্তমান ক্ষমতাসীনদের দ্বারা ‘গভীরভাবে প্রভাবিত’ এবং এতে আসামির পক্ষে মত প্রকাশের সুযোগ রাখা হয়নি।