কন্যাশিশুর লেখাপড়া যে ১০ দেশে খুব কঠিন
জাতিসংঘের মতে, গত এক দশকে বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতি প্রায় শূন্যের কোঠায়। শিক্ষার মান বিবেচনা করে আরেকটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৬০ কোটি শিশু বিদ্যালয়ে গেলেও তারা প্রায় কিছুই শিখছে না। এর মধ্যে সাহারা অঞ্চলের আফ্রিকান দেশগুলোই সবচেয়ে বেশি সংকটে রয়েছে। এই দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে শিক্ষায় ছেলেদের চেয়ে পিছিয়ে আছে মেয়েরা।
আফ্রিকা অঞ্চলের এ দেশগুলো যুদ্ধ-সংঘর্ষ, শাসন-শোষণের কারণে ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই দারিদ্র্য, অপুষ্টি, খাদ্যঘাটতি, গৃহহীন মানুষগুলো বিদ্যালয়ে যাওয়ার চেয়ে কাজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সেইসঙ্গে রয়েছে কন্যাশিশুর শিক্ষা গ্রহণ না করার ক্ষেত্রে সামাজিক ও ধর্মীয় নানা বাধানিষেধ।
গত বছর জাতিসংঘ জানায়, বিশ্বব্যাপী ছয় কোটি ৯০ লাখ শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে শিক্ষাক্ষেত্রে ভালো পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে এই নিয়োগ দিতে হবে। সেই সঙ্গে কন্যাশিশুদের বিদ্যালয়মুখী করতে হবে। কারণ, বিশ্বের এখনো প্রায় ১৩ কোটির ওপরে কন্যাশিশু একেবারেই বিদ্যালয়ে যায় না।
এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে আজ ১১ অক্টোবর বুধবার বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস।
আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে বিবিসি এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গণমাধ্যমটি এমন ১০টি দেশের চিত্র তুলে ধরেছে, যেখানে কন্যাশিশুদের শিক্ষার হার একেবারেই কম। দারিদ্র্য, যুদ্ধ, সংঘর্ষ, সামাজিক ও ধর্মীয় বিধিনিষেধ যার অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ দক্ষিণ সুদানের অধিকাংশ বিদ্যালয় যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশটির চার ভাগের তিন ভাগ কন্যাশিশুই বিদ্যালয়ে যায় না। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ৮০ শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র একজন শিক্ষক। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মাত্র ১৭ ভাগ তরুণী বিদ্যালয়ে যায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে। লিঙ্গবৈষম্য প্রবল আফগানিস্তানে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি বিদ্যালয়ে যায়।
মধ্য আফ্রিকার দরিদ্রতম দেশ শাদে কন্যাশিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে চাইলে মুখোমুখি হতে হয় নানা প্রতিবন্ধকতার। মালির মাত্র ৩৮ ভাগ কন্যাশিশু প্রাথমিক শিক্ষা লাভের সুযোগ পায়। বুরকিনা ফাঁসোর শতকরা একজন ছাত্রী মাধ্যমিক সম্পন্ন করে থাকে।
লাইবেরিয়ার প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ শিশুই বিদ্যালয়ে যায় না। ইথিওপিয়ার পাঁচজনের মধ্যে দুজন কন্যাশিশুরই ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়ে যায়। আর পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনির ২৪ বা ২৫ বছর বয়স না হলে নারীরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় না।