২২০০ বছরের পুরোনো উঁইপোকার ঢিপি
মানুষ বুদ্ধিমান প্রাণী। মানুষের গড়া বাড়ি টেকে কয়েক যুগ থেকে শতবর্ষ পর্যন্ত। তবে কোনো বাড়ি অক্ষতভাবে হাজার বছর টিকে থাকে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু অনেক কীটপতঙ্গ আছে যাদের তৈরি বাড়ি হাজার বছর পর্যন্ত টিকে যায়। এমন পোকার একটি হলো উঁইপোকা। সম্প্রতি মধ্য আফ্রিকার মিয়োম্বো বনভূমিতে দুই হাজার ২০০ বছর আগের একটি উঁইপোকার ঢিপি পাওয়া গেছে। আর এর মাধ্যমে জানা গেছে উঁইপোকার বসতি তৈরির দক্ষতা, বসবাসের নিয়মকানুনসহ অবাক করা সব তথ্য।
বেলজিয়াম ও কঙ্গোর একদল গবেষক উঁইপোকার টিপিটি নিয়ে গবেষণা করেন। আফ্রিকায় পাওয়া চারটি বড় ঢিপির কার্বন পরীক্ষা করে তাদের বয়স নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি ঢিপির লম্বালম্বি মাটির তেজস্ক্রিয় কার্বন পরমাণুর (আইসোটোপ) নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যে চারটি ঢিপি পরীক্ষা করা হয়েছে তার মধ্যে দুটির ওপরের দিকে উঁইপোকারা বসবাস করছে। আর দুটি পরিত্যক্ত। সবচেয়ে বড় পরিত্যক্ত ঢিপির বয়স দুই হাজার ৩৩৫ থেকে দুই হাজার ১১৯ বছর।
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের আপার কাটাঙ্গার লুবাম্বাশি এলাকায় মিয়োম্বো বনভূমির একটি এলাকায় ‘ম্যাক্রোটামিস ফ্যালসিগার’ প্রজাতির উঁইপোকারা এই ঢিপিগুলো তৈরি করেছে।
সাধারণত এত বড় পুরোনো ঢিপি দেখা যায় না। এই ঢিপিতে উঁইপোকাদের ফসিল সংরক্ষিত আছে। ৭৫০ বছরের পুরোনো আরেকটি ঢিপি পাওয়া গেছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটি অস্বাভাবিক নয়। কয়েক হাজার বছর বসবাসের উপযোগী করে এটিও তৈরি করা হয়েছে। উঁইপোকারা ১০ মিটার উঁচু আর ১৫ মিটার প্রশস্ত বসতি গড়তে পারে। বাইরে আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি এই ঢিপিতে তারা বংশবিস্তার করে।
পালিওজিওগ্রাফি, পালিওক্লাইমেটোলজি, পালিওইকোলজি সাময়িকীতে বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, ‘খাড়া ঢিপিগুলো গবেষণা করে জানা গেছে, রানি উঁইপোকোর মৃত্যুর পরও ঢিপিগুলো টিকে থাকে। এই রানি উঁইপোকা কদাচিৎ ২০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।’