চীনে পুরুষ মশার ‘কারখানা’
যত কাণ্ড সব ড্রাগনের দেশ চীনে। প্লাস্টিকের চাল, ক্লোন গরু উৎপাদনের পর এবার নাকি রীতিমতো কারখানা গড়ে তাতে মশার চাষ করছে চীনারা। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক খবরে জানিয়েছে, ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়াসহ মশাবাহী নানা রোগ প্রতিরোধে কারখানায় মশার চাষ করা হচ্ছে।
চীনের পিপলস ডেইলির সূত্রে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, চীনের গোয়ানডং প্রদেশ এবং গুয়াংজু সায়েন্স সিটিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সুবিধার কয়েকটি পরীক্ষাগার তৈরি করা হয়েছে, যাকে স্থানীয়রা মশার কারখানা নামে অভিহিত করছে। প্রতি সপ্তাহে এই পরীক্ষাগারে প্রায় তিন কোটি ৪০ লাখ মশা উৎপাদন করা হচ্ছে, আবার পরে তা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বাইরের পরিবেশে।
গবেষকদের দাবি, এ কারখানায় উৎপন্ন পুরুষজাতীয় মশারা কামড়াতে পারে না। ফল-ফুল এবং পাতার রস খেয়ে বাঁচে এরা। তবে পরীক্ষাগারে জন্ম নেওয়া এ মশাগুলো তাদের লালার মাধ্যমে ডেঙ্গু মশার জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এদের লালার সংস্পর্শে আসার পর ডেঙ্গু মশার প্রজনন ব্যাহত হয়।
গবেষকদের সূত্রে পিপলস ডেইলি আরো জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষাগারে বিশেষভাবে এই জীবাণুমুক্ত ও অনুৎপাদনশীল মশা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি।
গবেষকরা বলছেন, তাঁদের পরীক্ষাগার থেকে যে পুরুষ মশা ছাড়া হয় তাতে কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই, এমনকি এগুলো কামড়ায়ও না। পরীক্ষা করে এর সফলতাও মিলেছে। এ পরীক্ষার ফলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মশার জন্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
মশাবিষয়ক এ পরীক্ষাগারের পরিচালক সি ঝিওং জানাচ্ছেন, পরীক্ষামূলকভাবে ব্যাপক সাফল্য মিলেছে এই পরিকল্পনায়। এতে চলতি বছরে প্রায় ৯০ শতাংশ মশা কমানো সম্ভব হয়েছে। গত বছরই চীনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হন। শুধু গুয়াংজু প্রদেশেই মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।