‘স্তন কোনো অস্ত্র নয়’
স্তন দিয়ে এক নারী নাকি ‘আক্রমণ’ করেছিলেন পুলিশের এক কর্মকর্তাকে! আর এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হংকংয়ের ওই নারীকে জেলে পাঠিয়েছেন দেশটির আদালত। অদ্ভুত এ রায়ের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং। স্থানীয় সময় আজ সোমবার সকালে বক্ষবন্ধনী পরে প্রতিবাদ করেছেন প্রায় ৬০০ মানুষ।
চলতি বছরের মার্চে হংকংয়ে চোরাচালানি মাফিয়া ও রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে এক বিক্ষোভের সময় এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এনজি লাই ইয়ং (৩০) নামে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ওই নারী অভিযোগ করেন, প্রতিরোধের নামে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন।
তবে মামলা আদালতে যেতেই পুলিশ কর্মকর্তা চান কাং পো অভিযোগ করেন, তাঁর ডান হাতে ‘স্তন দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা’ করেছেন ৩০ বছরের ওই নারী। এই অভিযোগের ভিত্তিতে লাই ইয়ংকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত। আদালত রায়ে জানান, যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনার উদ্দেশে লাই ইচ্ছা করেই তাঁর স্তন ওই পুলিশ কর্মকর্তার দিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন।
তবে সেই দিনকার ঘটনার ভিডিও ফুটেছে দেখা যায়, বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে যান লাই ইয়ং। এর ঠিক পরেই কী ঘটেছে ভিডিও ফুটেজটিতে তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু ফুটেজটি যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে ওই নারীর নাখ ও মুখ থেকে গলগল করে রক্ত পড়ছে।
আদালতের এ রায় জানাজানি হলে প্রায় ৬০০ মানুষ বক্ষবন্ধনী পরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা ‘স্তন কোনো অস্ত্র নয়’, ‘পুলিশ তোমার লজ্জা হওয়া উচিত’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা আদালতের রায়কে ‘হাস্যকর’ হিসেবেও অভিহিত করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জেমস হন প্রথমবারের মতো বক্ষবন্ধনী পরেছেন উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘হাস্যকর এই বিচার সম্পর্কে বিশ্বকে জানাতেই আমরা এই অদ্ভুত পথ বেছে নিয়েছি।’
এ ছাড়া প্রসঙ্গটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ মানুষও প্রশ্ন তুলেছেন কীভাবে স্তন দিয়ে কাউকে আক্রমণ করা যায়! এ রায়ের ফলে ভবিষ্যতে যৌন হেনস্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে যাবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই।