সৌদির অবরোধের শঙ্কায় লেবানন
কাতারের ওপর সৌদি আরব যে ধরনের অবরোধ দিয়েছিল, দাবি আদায়ে লেবাননের ক্ষেত্রেও তা করতে পারে বলে মনে করছেন দেশটির রাজনীতিক ও ব্যাংক কর্মকর্তারা। এতে বড় ধরনের বিপাকে পড়তে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, চলতি বছরের ৫ জুন সৌদি আরবসহ মিত্র দেশগুলোর নৌ, স্থল ও আকাশপথ অবরোধ খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) জোগানদাতা, আয়তনে ক্ষুদ্র রাষ্ট্র কাতারে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের আরেক ছোট দেশ লেবাননের তেমন কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ কিংবা আর্থিক সামর্থ্য নেই। আর এ কারণেই দেশটির জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে।
লেবাননের চার লাখের মতো নাগরিক উপসাগরীয় দেশগুলোতে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। তাঁদের পাঠানো বার্ষিক ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি ডলার লেবাননের অর্থনীতির প্রাণ। এমন বাস্তবতায় সৌদি কোনো অবরোধ আরোপ করলে তা অর্থনীতিতে ধস নামাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লেবাননের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘এরই মধ্যে নাজুক লেবাননের অর্থনীতিতে এ ধরনের বিষয় (অবরোধ) মারাত্মক হুমকি। তারা বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চালন বন্ধ করে দিলে দুর্যোগ দেখা দেবে।’
সৌদি আরব সফরে গিয়ে গত ৪ নভেম্বর আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা দেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ আল-হারিরি। এই পদত্যাগকে সৌদির চাপ হিসেবে দেখছেন লেবাননের রাজনীতিকরা।
পদত্যাগের পর রোববার প্রথম জনসমক্ষে বক্তব্য দেন সৌদির কর্তাদের মিত্র হারিরি। সেদিন তিনি আরবদের পক্ষ থেকে অবরোধ দেওয়া হতে পারে বলে সতর্ক করে দেন। একই সঙ্গে উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত লাখ লাখ লেবাননের নাগরিকের জীবন-জীবিকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
হারিরি বলেন, অবরোধ থেকে বাঁচতে সৌদি তাঁকে কিছু শর্তের কথা জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইরান সমর্থিত লেবানিজ শিয়া মিলিশিয়াদের সংগঠন হিজবুল্লাহকে ইয়েমেনের সংঘাতে নাক গলানো বন্ধ করা।
বিশ্লেষকদের ধারণা, লেবাননে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক হিজবুল্লাহর বিষয়ে একটা সমঝোতায় না এলে হয়তো কাতারের পরিণতি বরণ করতে হতে পারে হারিরির দেশকে।