ফের প্রেসিডেন্ট পদে লড়ছেন পুতিন
আগামী বছরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
গতকাল বুধবার ভলগা নদীর নগরী নিজনি নোভাগাৎতের গাড়ি তৈরির কারখানা গোর্কি অটোমোবাইল প্ল্যান্টে শ্রমিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় পুতিন এ ঘোষণা দেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুতিন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০০০ সাল থেকেই দেশটির ক্ষমতায় রয়েছেন। এবার নির্বাচিত হলে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি দেশ শাসন করার ক্ষমতা পাবেন।
আগামী বছরের মার্চে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। ১৯১৭ সালে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর একমাত্র জোসেফ স্টালিনই দেশটির ক্ষমতায় টানা ২৯ বছর ছিলেন। স্টালিনের পর পুতিনই হবেন রাশিয়ার সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নেতা।
পুতিন শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘রাশিয়া ফেডারেশনের আগামী বছরের নির্বাচনে আমি একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়ব। এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো স্থান আর কারণ থাকতে পারে না। আমি আশা করি, এটা আমাদের সবার জন্যই ভালো কিছু হবে।’
এরই মধ্যে রাশিয়ার জনপ্রিয় টিভি সাংবাদিক কেসেনিয়া সোবশেক আগামী নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। হিসাব বলছে, পুতিনের দিকেই পাল্লা ভারী।
তবে অর্থ আত্মসাতের মামলা থাকায় প্রধান বিরোধী দলের নেতা অ্যালেক্সি নাভানলিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও তিনি দাবি করেছেন, রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়াকে ফের বৈশ্বিক ক্ষমতার পাকাপোক্ত অবস্থানে নিয়ে আসার জন্য পুতিন অনেক রাশিয়ানের কাছেই একজন শক্তিশালী নেতা। তবে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
পুতিন ১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর রাশিয়ার লেনিনগ্রাদে (বর্তমানে সেন্ট পিটার্সবার্গ) জন্মগ্রহণ করেন। আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে তিনি যোগ দেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে। তিনি পূর্ব জার্মানিতে গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেন।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়ার ক্ষমতার বসেন বরিস ইয়েলিৎসিন। তাঁর জমানা শেষ করে ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে খুব সহজভাবেই জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হন সাবেক এই কেজিবির সদস্য। ২০০৪ সালের নির্বাচনে তিনি ফের জয়ী হন।
রাশিয়ার সংবিধান অনুসারে কোনো প্রেসিডেন্ট এক মেয়াদে দুবারের বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। ফলে প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দিয়ে পুতিন তখন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন।
২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পুতিন তৃতীয়বারের মতো জয়ী হন।