চাকরি না পেলে টাকা ফেরত দেবে বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষাদান শেষে চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজের অন্তর্ভুক্ত? অন্তত আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তো কখনোই নয়! যুক্তরাজ্যের গিল্ডফোর্ডে অবস্থিত আইনশিক্ষার জন্য বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ল সেই ঝুঁকিটিই নিতে চলেছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের ঘোষণা, স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার নয় মাসের মধ্যে চাকরি না পেলে শিক্ষার খরচ অর্ধেক ফেরত দেবে তারা।
চলতি সপ্তাহেই বিশ্ববিদ্যালয়টির এক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চমকপ্রদ এ মানি ব্যাক গ্যারান্টির বিষয়টি জানানোর খবর প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের পত্রিকা দি ইনডিপেনডেন্ট। বিশ্ববিদ্যালয়টির ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড জনস্টন লিখেছেন, ‘এই টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি শুধু চাকরির সঙ্গেই সম্পৃক্ত নয়, এটি শিক্ষার জন্য আপনার শ্রম ও বিনিয়োগ ফেরত দেওয়ারও বিষয়।’
ওয়েবসাইটে ডেভিড জনস্টন আরো লেখেন, ‘যুক্তরাজ্যের নতুন নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা অনেক কঠিন এবং ব্যয়বহুলও, বিশেষ করে যাঁরা বাইরে থেকে আসেন। তাই শুধু একটি ডিগ্রির জন্যই শিক্ষা নয়, এখনকার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তাঁদের শ্রম ও অর্থ বিনিয়োগের পরিষ্কার ফলাফল দেখতে চান। আর আমরা সেটা দিচ্ছি।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের শিক্ষা কাজে লাগিয়ে নয় মাসের মধ্যে আইনপেশায় কাজ শুরু করতে পারবে শিক্ষার্থীরা, এ বিষয়টিতে তারা অনেকাংশে নিশ্চিত। আর এ কারণেই মানি ব্যাক গ্যারান্টি দিতে এগিয়ে গেছেন তাঁরা।
আলোচিত এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে পড়তে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীরা ইউনিভার্সিটি অব ল’তে পড়তে আগ্রহী হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। প্রধান নির্বাহী ডেভিড জনস্টন ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এমন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেখান, যেটি শিক্ষার সঙ্গে চাকরিরও গ্যারান্টি দিচ্ছে। শিক্ষা এখন জীবনের সঙ্গে অনেক বেশি সম্পৃক্ত একটি বিষয়। আর সে কথা ভেবেই আমাদের এই নতুন চ্যালেঞ্জ।’
তবে এই চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনটির ব্যাপারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও দেখিয়েছেন অনেকে। সামাজিক গণমাধ্যমে বহুল প্রচারিত এই বিজ্ঞাপনটিকে যুক্তরাজ্যের নতুন ‘অর্থনৈতিক শিক্ষানীতির’ সঙ্গে মানানসই একটি ‘বাণিজ্যিক’ সিদ্ধান্ত বলেও উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ। আগামী সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থীর এ-লেভেল পরীক্ষার ফল দেবে। এরপরই তারা প্রবেশ করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনে। এ সময়ে এমন চটকদার বিজ্ঞাপনটি কেবল ছাত্র ভর্তির চাল বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।